রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় অধিবাসীরা এখন সংখ্যালঘু হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে মানসিক চাপের ঝুঁকিও বাড়ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিমত ব্যক্ত করেছে। বলেছে, কক্সবাজারে স্থানীয় অধিবাসী ৩৪ দশমিক ৮ ভাগ। সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ৬৩ দশমিক ২ ভাগ। স্বাস্থ্য সেবায়ও মোট চাহিদার ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত রোহিঙ্গাদের পেছনে ব্যয় হচ্ছে।
টিআইবি'র পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ধীরে ধীরে এই সংকটের গুরুত্ব কমে যাওয়ায় মানবিক সহায়তা অনুদানও হ্রাস পাচ্ছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের ওপর আর্থিক ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি করছে। টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা সত্য যে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে এসেছে। কিন্তু এটাও দেখা যাচ্ছে কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ অর্থের একটি বড় অংশ বিলাসিতায় ব্যয় করছে। তাছাড়া জাতিসংঘের অনুদানে পরিচালিত কর্মসূচির পরিচালন ব্যয়ের যে হিসাব সংস্থাগুলো দিয়েছে তার প্রকৃত পরিমাণ নিঃসন্দেহে আরো বেশি। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয় বহন করতে পারবে কিনা সে প্রশ্নও এসেছে টিআইবির প্রতিবেদনে।
ড. ইফতেখার বলেন, মিয়ানমারকে সুরক্ষা দিতে চীন, ভারত ও জাপানের অবদান সবচেয়ে বেশি। এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার কাজে থাকা এনজিওগুলো নিজেদের পরিচালন ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ করতে চায় না। যে হিসাব তারা দেয় প্রকৃত ব্যয় তার চেয়ে বেশি। টিআইবি মনে করে রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত ফেরত পাঠানো যায় সে লক্ষ্যে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা সংস্থাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা আরো জোরদার করা জরুরি।