বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী ১৪০ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। এর বেশিরভাগই অজ্ঞাত। সরকারি কাজে বাধাদান ছাড়াও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী ও উদীচীর কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফ নূরসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রীক দেবী থেমিসের আদলে নির্মিত ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চলছে। একপক্ষ প্রতিবাদে করছেন। তাদের বক্তব্য, এ ভাস্কর্য অপসারণ করে মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা হয়েছে। অন্যপক্ষ, সে সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছে, এর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কোন সম্পর্ক নেই।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। তারাই এ ভাস্কর্যটিকে সরানোর জন্য আলটিমেটাম দিয়ে আসছিল। চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বিষয়টি মুসলমানদের বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, মূর্তি সরিয়ে ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে।
বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এটা মৌলবাদী গোষ্ঠীর কাছে নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, হেফাজত নির্বাচনে আসনও দাবি করতে পারে।
বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ভাস্কর্য অপসারণকে যৌক্তিক বলে বর্ণনা করেছেন।
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ধর্মের অপব্যবহার করে রাজনীতির চেষ্টা চলছে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেছেন, ভাস্কর্য অপসারণের ঘটনা ধর্মীয় মৌলবাদী অপশক্তির কাছে কার্যত মাথানত করার শামিল।
সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, লেখক হাসান আজিজুল হক সহ ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ধর্মান্ধ অপশক্তির কাছে নতি স্বীকার করেছে সরকার।
এ ভাস্কর্যের রূপকার মৃনাল হক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, মায়ের মৃত্যুতেও এমন কষ্ট হয়নি। ভাস্কর্যটি কোথায় প্রতিস্থাপন হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। হেফাজতে ইসলাম অবশ্য বলেছে, সব মূর্তি অপসারণ করতে হবে। ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট।