অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

করোনার কারণে বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়েছে:  ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো 


ঢাকার একটি স্কুলের ক্লাসরুমে হাতে জীবাণুনাশক দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা- ফাইল ফটো- রয়টার্স
ঢাকার একটি স্কুলের ক্লাসরুমে হাতে জীবাণুনাশক দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা- ফাইল ফটো- রয়টার্স

করোনা মহামারীর কারণে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়েছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ এবং শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো প্রকাশিত এশিয়ায় শিক্ষা খাতের ওপর করোনা ভাইরাসের প্রভাব ও মোকাবিলা কার্যক্রম বিষয়ক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২০ সালের প্রথম দিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করার পর থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর এবং দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়াসহ এশিয়ার প্রায় ৮০ কোটি শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে।

প্রতিবেদনটি শিশুদের পড়াশোনার ওপর মহামারির অব্যাহত প্রভাব এবং তা মোকাবিলায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারের গৃহীত কর্মসূচি ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরে। যখন সাধারণত শিশুদের বার্ষিক ছুটি থেকে স্কুলে ফেরার কথা সেই সময়ে এই প্রতিবেদনে নিরাপদ হওয়া মাত্রই স্কুলগুলো খুলে দেয়ার জন্য সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। কিছু দেশে যেমন ফিলিপাইনে মহামারির পুরো সময়ে স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয় যা এখনও বহাল আছে এবং সে কারণে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের ২ কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর সশরীরে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে প্রতিবেদিনে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশে গত ১২ ই সেপ্টেম্বর স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত মহামারির পুরোটা সময় সেগুলো বন্ধ ছিল যে কারনে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এমনকি বর্তমান সময়ে, যখন পৃথিবী ২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে প্রবেশ করেছে, তখনও এই অঞ্চল জুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার কারণে দ্বিতীয় বছরের মতো স্কুল বন্ধ থাকছে বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয় এভাবে ক্রমাগত স্কুল বন্ধ থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পরিণতি অত্যন্ত গুরুতর যার মধ্যে রয়েছে পড়াশোনার ক্ষতি, মানসিক দুর্দশা, স্কুলের খাবার ও নিয়মিত টিকা না পাওয়া, কাঠামোগত শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং শিশুশ্রম ও বাল্য বিবাহ বৃদ্ধি। এই ভয়াবহ পরিণতিগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ইতিমধ্যেই অসংখ্য শিশুকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং অনেকগুলো আগামী বছরগুলোতে বোধ করা হবে বলে ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো সতর্ক করেছে ।

পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউনিসেফের পরিচালক মার্কোলুইজি কোরসি এ বিষয়ে বলেন শিক্ষা সেবার ব্যাঘাত শিশুদের ওপর, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের ওপর যে প্রভাব ফেলেছে তা উপেক্ষা করার কোন উপায় নাই। তিনি বলেন পুরো একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে রয়েছে তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরাপদে বিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অন্যথায়, পড়াশোনার এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।

XS
SM
MD
LG