অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে ৮ দিনে ৫৩ সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনা, নিহত ৯- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন


বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার একটি হিন্দু মন্দিরে কোরান রাখার ফুটেজ প্রকাশের পর শুরু হওয়া সহিংসতার অংশ হিসাবে গাড়ী পোড়ানোর দৃশ্য- ফাইল ফটো- এএফপি
বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার একটি হিন্দু মন্দিরে কোরান রাখার ফুটেজ প্রকাশের পর শুরু হওয়া সহিংসতার অংশ হিসাবে গাড়ী পোড়ানোর দৃশ্য- ফাইল ফটো- এএফপি

বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ৫৩টি ঘটনা ঘটেছে এই বছরের অক্টোবর মাসে। একই সময়ে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪১টি ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পুলিশের গুলি ও হামলায় ৯ জন নিহত ও ২ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জন মুসলিম, যারা নিহত হন পুলিশের গুলিতে। এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বী ৩ জন নিহত হয়েছেন। গত ১৩ থেকে ২০ অক্টোবর আট দিনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা নিয়ে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যকে দোষারোপ করছে। এতে মূল অপরাধী দৃষ্টির বাইরে চলে যায়। যার ফলে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করা যায় না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের বড় উৎসব দুর্গাপূজার সময় তাদের ওপর সুপরিকল্পিত নিরবচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সবচেয়ে উদ্বেগজনক ঘটনা ছিল। কুমিল্লায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এবং তার জের ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদী ও সুবিধাভোগী গোষ্ঠী দেশের ১৯টি জেলায় বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

প্রতিবেদনে দাবী করা হয়, ঘটনা শুরুর পর প্রশাসনকে উদ্বেগের কথা জানানো হলেও হিন্দু সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানানো হয়। এ সময় দ্রুত প্রতিমা বিসর্জনের তাগাদা দেওয়া হয়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দশমীর দিন বিসর্জন দিতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কায় অনেক মন্ডপে অষ্টমীর দিনই বিসর্জন দিয়ে সেখানকার দুর্গাপূজা শেষ করা হয়। প্রতিমা বিসর্জনের পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মন্দির ত্যাগ করলে হামলা হয়। হিন্দু জনগোষ্ঠীর শারদীয় দুর্গাপূজায় হামলার অর্থ হচ্ছে রাষ্ট্রপ্রদত্ত ধর্মীয় অধিকার পালনে রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হামলা প্রতিরোধ, হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ তাদের পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার না হওয়া, প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা, জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বপালনে অবহেলা, দোষারোপের রাজনীতি এবং প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত না করে ঢালাওভাবে গ্রেফতার দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারপ্রক্রিয়া জটিল করা হচ্ছে।

XS
SM
MD
LG