অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

খালি চোখে মৃত্যুকে দেখেছি: তামিম ইকবাল


বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ওপেনার তামিম ইকবাল ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হত্যাযজ্ঞের সময় মাত্র ২০ গজ দূরে ছিলেন। কেমন ছিলেন, কিভাবে ছিলেন তার একটা আবেগময় বর্ণনা দিয়েছেন ইএসপিএন ক্রিকইনফো-কে। তার কথায়, মিনিট নয়। মাত্র ৩০ সেকেন্ডের ব্যাপার। সকালেই স্থির করেছিলাম বাসে করে জুমার নামাজ পড়তে যাব মসজিদে। দুপুর দেড়টায় বাস ছাড়ার কথা। পূর্ব নির্ধারিত প্রেস কনফারেন্সে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দু’মিনিট সময় বেশি নিয়ে নিলেন। আর এ দু’মিনিটই পার্থক্য গড়ে দিল। বলতে পারেন বাঁচিয়ে দিল। মসজিদের কাছাকাছি পৌঁছাতেই সহকর্মীরা কিছু একটা দেখতে পেল। আমি নিজে রাস্তায় একটি দেহ পড়ে থাকতে দেখি। তখন মনে হয়েছিল কেউ হয়তো মাতাল কিংবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। স্বাভাবিকভাবেই নেই বিষয়টা। বাস চলতে থাকে। মসজিদের কাছে থামতেই দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় একজন শুধু চিৎকার করছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলছে, মসজিদে গুলি চলছে। কেউ যেও না। ভয় পেয়ে গেলাম। মাত্র ২০ গজ দূরে। বাস থেকে নেমেই মসজিদে প্রবেশ করার কথা। বাস থেকেই দেখতে পেলাম মসজিদের ফ্লোরে কয়েকটি দেহ পড়ে আছে। এটা দেখার পর হতবিহ্বল, কি করবো? যাদের মাথায় টুপি ছিল তারা সবাই টুপি খুলে ফেললো। যারা পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় ছিল তারা জ্যাকেট পড়ে নিল। এরপর বাসের মেঝেতে শুয়ে পড়লাম। বাস ড্রাইভারকে বললাম, কিছু একটা করুন। ড্রাইভার নড়লেন না। ৬/৭ মিনিট কেটে গেল। কোন পুলিশও নেই। হঠাৎ স্পেশাল ফোর্স এলো ঝড়ের বেগে। আমরা সবাই তখন চিৎকার করে বলছি, আমাদের যেতে দাও। ড্রাইভার কি কারণে যেন আরো কয়েক মিটার এগিয়ে নিলেন। তখন আমরা সবাই আশা ছেড়ে দিয়েছি। আমরা বাসের মাঝখানের দরজায় ধাক্কা ও লাথি মারতে শুরু করলাম। এই করতে করতে প্রায় ৮ মিনিট সময় চলে গেল। কি করবো? একবার ভাবলাম, সবাই পার্কের ভিতর দিয়ে দৌড় দিব। পেছনে ভয়। যদি বন্দুকধারী আমাদের দেখে গুলি করতে শুরু করে। তামিম বললেন, জানেন। খালি চোখে মৃত্যুকে দেখেছি। এটা সহজে ভুলতে পারবো না। তামিম সাক্ষাতকার শেষ করলেন এই বলে, একটু এদিক-সেদিক হলেই সব শেষ হয়ে যেত। আসলেই ৩০ সেকেন্ডের ব্যাপার।

please wait

No media source currently available

0:00 0:01:59 0:00


XS
SM
MD
LG