বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় সেখানকার সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এই সংগঠনটির সভাপতি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল সন্ধ্যায় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এর কার্যনির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভা ডাকা হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয় ।সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে সংঘটিত ঘটনাবলি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে আইনের মাধ্যমেই দুর্বৃত্তদের মোকাবেলা করা হবে এবং আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
এতে বলা হয় বরিশালের ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা কীভাবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে হেনস্থা হয়েছেন। তাঁর বাসায় হামলা করা হয় যেখানে তাঁর করোনা আক্রান্ত অসুস্থ বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন বলে উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় তাঁদের উপস্থিতিতেই ওই কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করা হয়েছে, তাঁর বাড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁর চামড়া তুলে নেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে স্লোগান দিয়ে মিছিল করা হয়েছে। এতে বলা হয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও তার দুর্বৃত্ত বাহিনী সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং সব জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে ।
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এমন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে বরিশালের মেয়র যার অত্যাচারে সমগ্র বরিশাল বাসী অত্যন্ত অতিষ্ঠ সেই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর হুকুমেই এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি অবিলম্বে তাঁর গ্রেফতার দাবি জানিয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অত্যন্ত আস্থাবান এবং তাঁর লালিত দেশপ্রেমের চেতনা ধারণ করে তাঁরা কাজ করছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় ।
এদিকে, সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয় বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া পৃথক দুই মামলাতেই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় করা মামলা দুইটিতে আরও ছয় শতাধিক লোককে আসামি করা হয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করে বলা হয় দুই মামলার একটি দায়ের করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান এবং অপরটি কোতোয়ালি মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ জামাল। সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১২ জন নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়। খবরে আরও বলা হয়েছে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের মেট্রোপলিটান শাখা ঘটনার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়ী করে তাঁর অপসারণ দাবি করেছে।