অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার এখন রিমান্ডে


ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানা
ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানা

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম রোববার গণমাধ্যমকে এটা নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকায় প্রাপ্ত সর্বসাম্প্রতিক খবরে জানা গেছে ভারতের কোচবিহার জেলার আদালত পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার সংবাদমাধ্যমকে জানান, বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের জন্য প্রয়োজনীয় ধারায় ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। আদালতে রোববার তাকে হাজির করে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে।

এ দিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশের পুলিশ অফিসার সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম রোববার গণমাধ্যমকে এটা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কাজটা যদিও সহজ নয়, কারণ তিনি অন্যদেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন তার বিরুদ্ধে সে দেশে মামলা হয়েছে। আমাদের এখানে তিনি এক মামলার আসামি। মামলার কথা বলে আমরা তাকে ফেরত আনার চেষ্টা করছি। এই প্রচেষ্টা সফল না হলে প্রক্রিয়া হবে দীর্ঘ।

তবে পুলিশের আইজি ড. বেনজির আহমেদ রোববার বিকালে জানিয়েছেন, আসামি বিনিময় চুক্তির আওতায় সোহেল রানাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হবে।

ভারতে বিচার সম্পন্ন হলেই তাকে আনা যাবে। পুলিশ কমিশনার বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। তার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হবে ছুটি না নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করা। প্রথমে পুলিশের বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর তাকে শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুত করা হবে। এ ছাড়া টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রচলিত আইনে তার শাস্তি হবে।

অবৈধভাবে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশের অভিযোগে গত শুক্রবার সোহেল রানাকে কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। ঢাকার বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেলকে গ্রেপ্তারের পরপরই নর্থ বেঙ্গল বিএসএফের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে এটা নিশ্চিত করা হয়। বিএসএফ ওই টুইট বার্তায় জানায়, সোহেলের কাছ থেকে বিদেশি পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন, এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মেখলিগঞ্জ থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়।

বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আজম মিয়াঁ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তিনি ডিউটিতে ছিলেন। তারপর থেকে অনুপস্থিত। সোহেল রানা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের একজন পৃষ্ঠপোষক। তার বোন সোনিয়া মেহজাবিন এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান। গত ১লা সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ১৭ জন প্রতারিত গ্রাহকের পক্ষে একটি মামলা দায়ের করেন জনৈক রাসেল। এতে ১০ নম্বর আসামি করা হয় এই পুলিশ কর্মকর্তাকে। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯১৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়া বাদী রাসেলের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একই সঙ্গে অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা রুজু করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান থানাকে আদেশ দেন। যথারীতি মামলা দায়ের হয়। মামলায় বর্ণিত এজাহার থেকে জানা যায়, বাদী রাসেল আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, সোহেল যেকোনো মুহূর্তে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। বাদী রাসেল এটাও অভিযোগ করেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে থানা প্রথমে মামলা নেয়নি। পুলিশের গুলশান বিভাগের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার এড়াতেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সোহেল রানা।

XS
SM
MD
LG