বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক সাহায্য ২০১৯ সালের জন্য পাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, যতোই দিন যাচ্ছে সাহায্য-সহযোগিতার হার ততোই কমছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রতিশ্রুত সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৮-র মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিশ্রুত সাহায্যের ৭০ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল। অথচ এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই হার কোনক্রমেই ৪০ শতাংশের বেশি হবে না।
এদিকে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও মঙ্গলবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সহায়তার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের জন্যে ৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। এফএও ১ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের কথা জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে সাহায্য প্রাপ্তির সম্ভাবনা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় প্রতিশ্রুত ৩০১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৬৯ শতাংশ অর্থই হাতে পেয়েছিল। অথচ সংস্থাটি ২০১৯ সালের জন্যে ৩০৭ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের জন্য যে আবেদন জানিয়েছিল, এ জানুয়ারি পর্যন্ত তার মাত্র ২ শতাংশ অর্থ হাতে এসেছে।
এমনই এক বাস্তবতায় জাতিসংঘ ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে জেনেভায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় দাতা দেশ এবং সংস্থাগুলোর কাছে সাহায্য প্রাপ্তির লক্ষ্যে দাতাদের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায়ের জন্যে বৈঠক করবে বলে কর্মসূচি স্থির রয়েছে।
জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে ২০১৯-এর মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় ৯২০ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের আবেদন জানাবে। ২০১৮ সালে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছিল ৯৫১ মিলিয়ন ডলারের। প্রতিশ্রুতির ৭০ শতাংশ অর্থ পাওয়াও গেছে। সাহায্যের প্রাপ্তির বাস্তবতায়ই এ বছর সাহায্যের অংক কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সাহায্য ক্রমশ কমছে, সে প্রশ্নে বিশ্লেষণ করেছেন রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।