বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ঢাকা, খুলনা, মৌলভীবাজার, ফেনী, মানিকগঞ্জ ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা হয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে করে বেশ ক’জন শিক্ষার্থী আহত হন। ১০/১২ জন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। পুলিশ কোন মারমুখী ভূমিকায় ছিল না। বরং রাজশাহী ও বগুড়ায় পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর সঙ্গে সেলফি তুলে এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
ঢাকার ঝিগাতলায় কয়েক ঘণ্টাব্যাপী হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৭টার সময়ও সর্বশেষ হামলা হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছিল তখনই গুজব রটে চারজন নারী শিক্ষার্থীকে আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। এর পরই উত্তেজনা ছড়ায়। আওয়ামী লীগ অফিসেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা হেলমেট পড়ে আক্রমণ চালায়। এই সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। উত্তেজিত একজন ছাত্রী মিডিয়ার সামনে বলছিলেন, "কি অপরাধ আমাদের। ওরা কেন হামলা করলো?"
বাস চাপায় দু’জন সহপাঠির মৃত্যুর প্রতিবাদে নয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা ৭ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় বেহাল ট্রাফিক ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু মালিক-শ্রমিকরা পরিবহন বন্ধ করে জনগণের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ঢাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অন্যান্য জেলা থেকে। রাতে আন্তঃজেলা বাস চলাচল করলেও শনিবার রাতে পরিবহন মালিকদের সংগঠন বলেছে, নিরাপত্তা নেই, এ কারণে রাতেও বাস চলবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য আগামীকাল থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
ওদিকে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর বরাতে শিক্ষার্থীদের ওপর বল প্রয়োগ না করার কথা বলেছেন।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা বেআইনি।
বিরোধী বিএনপি ছাত্রদের আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছে। বলেছে, মন্ত্রীদের নির্দেশেই গণপরিবহন বন্ধ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা হচ্ছে।
সর্বশেষ গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ২৮টি সাইটের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।