অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ


ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ জেতার পর পাকিস্তানের খুশদিল শাহ বাংলাদেশের নুরুল হাসানের সাথে করমর্দন করছেন। ২২ শে নভেম্বর, ২০২১।
ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ জেতার পর পাকিস্তানের খুশদিল শাহ বাংলাদেশের নুরুল হাসানের সাথে করমর্দন করছেন। ২২ শে নভেম্বর, ২০২১।

শেষ ওভারের চরম নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে হেরে গেল বাংলাদেশ। এরই ফলে দীর্ঘ ৩ বছর পর ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো দলটি।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে হারলেও শেষ ওভারে দারুণ বল করে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের শেষ ওভারে ৮ রান দরকার পড়ে। প্রথম বল ডট দেওয়ার পর, পরের দুই বলেই সরফরাজ আহমেদ ও ইনফর্ম হায়দার আলীকে আউট করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে চতুর্থ বলে ইফতিখার আহমেদ ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে দেন। কিন্তু পঞ্চম বলে ইফতিখারকে ইয়াসির আলীর ক্যাচে পরিণত করে ম্যাচ ফের বাংলাদেশের দিকে নিয়ে আনেন রিয়াদ। তবে স্নায়ু চাপের শেষ বলটি আর রক্ষা হয়নি। এক বলে যখন পাকিস্তানের জিততে ২ রান দরকার, তখন মোহাম্মদ নওয়াজ ৪ হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ ঘরের মাঠে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ ম্যাচ টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে বিদেশ সফরে চলতি বছরের এপ্রিলেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ।

সোমবার (২২ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দু’দল। যেখানে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৪ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে শেষ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭ ওভারে ৩২ রান তোলেন দুই পাকিস্তানি ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এই স্পিনারের বল মারতে গিয়ে মোহাম্মদ নাঈমের কাছে ক্যাচ দেন পাকিস্তান দলনেতা। ২৫ বলে ২টি চারে ১৯ করেন তিনি।

তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই মূলত জয়ের ভীত গড়ে পাকিস্তান। এসময় মোহাম্মদ রিজওয়ান ও হায়দার আলী ৪৯ বলে ৫১ রান তোলেন। পরে শহীদুল ইসলাম এই জুটি বিচ্ছেদ ঘটান। তার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপেনার রিজওয়ান। তিনি ৪৩ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রান করেন।

রিজওয়ান আউট হলেও উইকেটে অবিচল থাকেন হায়দার। এই ডানহাতি দলকে শেষ অবধি টেনে নিয়ে যান। মাহমুদউল্লাহ বলে আউট হওয়ার আগে তিনি ৩৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন।

টাইগার বোলারদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ ৩টি উইকেট পান। এছাড়া আমিনুল ও শহীদুল একটি করে উইকেট দখল করেন।

টস জিতে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এদিনও শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। সাইফ হাসানকে বসিয়ে এ ম্যাচে উদ্বোধন করতে নামেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৭ রানের মাথায় শাহনেওয়াজ দাহানির বলে বোল্ড হন শান্ত (৫)।

এরপর ধীর গতির ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৫ বলে ৩০ তোলেন নাঈম ও শামীম হোসেন। কিন্তু ঝড়ো ব্যাটিংয়ের আভাস দিলেও শামীম ২৩ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন উসমান কাদিরের বলে। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার। আফিফ এসে দুটি ছক্কা হাঁকান বটে, তবে তিনিও টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাট করতে পারেননি। ২১ বলে ২০ রান করে সেই কাদিরের শিকার হন।

মন্থর ব্যাটিং করা নাঈম এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে জুটি গড়েন। এই জুটিতে ২৫ বলে ৩১ রান এসে কিছুটা দলীয় সংগ্রহ বাড়ে। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হলেও হাফসেঞ্চুরি বঞ্চিত হন নাঈম। তিনি মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। দুটি চার ও সমান ছক্কায় করেন ৫০ বলে ৪৭।

দলনেতা মাহমুদউল্লাহ ১৪ বলে ১৩ করে হারিস রউফের বলে আউট হন। দলের বাকিদের কেউই আর দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ফলে ১২৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

পাকিস্তানি বোলার ওয়াসিম ও কাদির ২টি করে উইকেট তুলে নেন। এছাড়া দাহানি ও রউফ পান একটি করে উইকেট।

ম্যাচে সেরা হন হায়দার আলী। আর সিরিজে সেরা মোহাম্মদ রিজওয়ান।

XS
SM
MD
LG