অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আন্তর্জাতিক গণআদালতের রায়ে মিয়ানমারের অং সান সুচি সরকার ও দেশটির সামরিক বাহিনী মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত


আন্তর্জাতিক গণআদালতের রায়ে মিয়ানমারের অং সান সুচি সরকার ও দেশটির সামরিক বাহিনীকে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। রায়ে মিয়ানমারের ওপর অবিলম্বে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি, মানবতা বিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিয়ানমারের সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বিদেশে ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত, মিয়ানমারের বাইরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গত ১৮ই সেপ্টেম্বর রোমভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক গণআদালতের বিচার শুরু হয় মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি, বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল ও সাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে সাত সদস্যের বিচারক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট আর্জেন্টিনার সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা দানিয়েল ফেইয়েরস্তেনি রায় ঘোষণা করে বলেন, সর্বমম্মতভাবে বিচারকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যেÑ মিয়ানমারের শাসক গোষ্ঠী গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। রায়ে ১৭টি সুপারিশ করা হয়। এতে মিয়ানমার সরকার ও আসিয়ান প্রতিনিধিরা রাখাইনের সব সশস্ত্র গ্রুপকে নিয়ে রাখাইন সীমান্ত বরাবর অঞ্চলে একটি অস্ত্র বিরতির প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করবেন। অং সান সুচি ঘোষিত যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাসহ সব গোষ্ঠীকে পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাকে রাখাইনের ঘটনা তদন্তে অনুমতি দেয়ার কথাও বলা হয় সুপারিশে। ১৯৮২ সনের নাগরিকত্ব আইন বাতিলের কথাও বলা হয়। মিয়ানমারের পার্লামেন্টে সামরিক প্রতিনিধির কোটা বাতিল করার সুপারিশও এসেছে এই রায়ে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশকে পূর্ণ বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে আনতে সংবিধানে নিশ্চিয়তা রাখার কথাও বলেছেন তারা। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াসহ যেসব দেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভার বহন করছে তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা দেয়ার কথাও বলা হয় এই গণআদালতের সুপারিশে। আসিয়ান সনদ অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়া এবং মিয়ানমার সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশও করেছেন বিচারকরা। স্মরণ করা যায় যে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ১৯৭৯ সনে ইতালিতে এই ট্রাইবু্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৩টি প্রতীকী বিচারের আয়োজন করেছে এই ট্রাইব্যুনাল।

please wait

No media source currently available

0:00 0:00:53 0:00

XS
SM
MD
LG