হোয়াইট হাউজ বলছে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি প্রস্তাবে স্বাক্ষর দিয়ে তা আইনে পরিণত করেছেন। এই আইনে উইঘুরের দাস-শ্রমিকদের উত্পাদিত পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশান অ্যাক্ট বছর খানেক ধরে আলাপ আলোচনার পর গত সপ্তাহে কংগ্রেসের চূড়ান্ত অনুমোদন পেল । এই আইন অনুযায়ী চীনে শিনজিয়াং অঞ্চল থেকে সব রকমের আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে যে পর্যন্ত না সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলি যুক্তরাষ্ট্রকে , “ পরিষ্কার ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ” দিতে পারে যে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় চীনা বন্দি শিবিরে ক্রীতদাস হিসেবে আটক মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর লোকদের ব্যবহার করা হয়নি।
বেইজিং অবশ্য এই শিবিরগুলোকে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্য , “ পুণরায় শিক্ষা প্রদানের” স্থাপনা বলে বর্ণনা করে থাকে।
বেইজিং’এ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শীতকালীন অলিম্পিকের আগে , অধিকার লংঘনের জন্য নতুন করে চীনের জবাবদিহিতার বিষয়টি উঠে আসলো। এ বছরের গোড়ার দিকে উইঘুরদের প্রতি চীনের আচরণকে যুক্তরাষ্ট্র গণহত্যা বলে ঘোষণা করে এবং গত সপ্তাহে শীতকালীন অলিম্পিক কুটনৈতিক ভাবে বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এ মাসের গোড়ার দিকে , একটি নিরপেক্ষ ট্রাইবুনাল উইঘুরদের উপর গণহত্যা চালানোর জন্য চীনের শীর্ষ নেতৃত্বকে “ প্রাথমিক ভাবে” দায়ী বলে চিহ্নিত করে। চীন এই আইনের নিন্দে করেছে এবং নিজেদের সীমান্তের ভেতরে বাধ্যতামূলক শ্রমের বিষয়টিতে নজর না দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ভন্ড বলেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান গত সপ্তাহে বলেন . “ শিনজিয়াং সম্পর্কিত বিষয়ের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস যে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে , চীন দৃঢ়তার সঙ্গে তার বিরোধীতা করছে”।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এই আইনের প্রশংসা করেছে এবং বলেছে যে উইঘুরদের প্রতি চীনে আচরণের প্রতি বিভিন্ন দেশের নজর দেয়ার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা।
উইঘুর হিউমান রাইটস প্রোজেক্টের সপক্ষে যোগাযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা পিটার আরউইন ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ এটি হচ্ছে বাদবাকি বিশ্বের জন্য একটা ইঙ্গিত যে যুক্তরাষ্ট্র আসলেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে”।
এই আইনটি ক্যাপিটল হিলে দ্বিদলীয় সমঝোতার একটি ব্যতিক্রমী দিক । প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার ডেমক্র্যাটিক ন্যানসি পেলসি ভোটের আগেই এই আইনের প্রশংসা করে বলেছেন যে এর ফলে শিনজিয়াং এ এবং ঐ অঞ্চলে চীনের মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো এবং চীনকে জবাবদিহি করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রসেকে একট সুযোগ প্রদান করেছে। আমেরিকা যদি, তার বানিজ্যিক স্বার্থের কারণে চীনে মানবাধিকারের পক্ষে সোচ্চার না হয়, তা হ’লে আমরা বিশ্বের যে কোন স্থানে মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলার নৈতিক অধিকার হারাবো।