অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাসের মাস


ফ্রিডম হাউস জাদুঘর
ফ্রিডম হাউস জাদুঘর
যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে ফেব্রুয়ারী মাসে কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাসের মাস পালিত হয়। এ সময় বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গদের সংগ্রামের ইতিহাস।
কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র 12 Years of Slave। এই ছবিটি তৈরি হয়েছে, সলোমন নর্থাপের লেখার ওপর ভিত্তি করে। ১৮৪১ সালে মিঃ নর্থাপকে ধরে এনে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হয়। তাকে অপহরণ করেছিল সেসময় দাস বাণিজ্যে পরিচিত একটি নাম জেইমস বার্চ।
ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়ায় বার্চের ছিল অনেক ভূসম্পত্তি । সেখানেই সে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ নারী-পুরুষ-শিশুকে আটকে রাখত, পরে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করবে বলে। সেই জায়গাটিকে বলা হতো slave pen.

আজও সেই slave pen-এর একটি ভবন টিকে আছে। সেই ভবনটি রূপান্তরিত হয়েছে ক্রীতদাস জাদুঘরে। সেই Freedom House জাদুঘরে, দর্শণার্থীরা দেখতে পান ক্রীতদাসদের কি ধরনের নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
ক্রীতদাসরা খুব অল্প বয়সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ত। তাদের বেশিরভাগই কাজ করত স্থানীয় তামাকের খামারে। তাদেরকে দক্ষিণের তুলোর খামারেও বিক্রি করে দেওয়া হতো। আলেকজান্দ্রিয়ার Black History Museum এর প্রধান Audrey Davis.
তিনি বলছিলেন, এই ক্রীতদাসরা আসত নানা প্রান্ত থেকে। অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেবার আগে তাদের এই slave pen-এ আটকে রাখা হতো। কখনও কখনও কেউ এসে, তাদেরকে সরাসরি পেন থেকে কিনে নিয়ে যেত। তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করার জন্যে তখন বাইরে আনা হত।

জেইমস বার্চের slave pen ছিল দেশের সবচেয়ে লাভজনক দাস লেনদেনের ব্যবসা। যে ক্রীতদাসদের স্বাস্থ্য ভালো ছিল তাদের দাম ছিল বেশি। অনেক সময়ই এই ক্রীতদাসদের নতুন কাপড় পরিয়ে বাজারে নিয়ে যাওয়া হত যাতে তাদের চড়া দামে বিক্রি করা যায়।
এই ক্রীতদাসদের শেকল পরিয়ে রাখা হত। শেকল পরা অবস্থায় হাটিয়ে নিয়ে যাওয়া হত মাইলেকে মাইল।
আমেরিকার সিভিল ওয়ারের সময় এই slave pen বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৬৩ সালে ততকালীন প্রেসিডেণ্ট এইব্রাহাম লিনকনের ইম্যান্সিপেইশন প্রক্লেমেশন সইয়ের মধ্যে দিয়ে অবসান হয় দাস প্রথার।
আমেরিকার ইতিহাসের একটি কলঙ্কময় অধ্যায় এই দাসপ্রথার যুগ। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই জাদুঘর। আজও সেখানে গেলে অনেকে শুনতে পান ক্রীতদাসদের কান্নার শব্দ।
XS
SM
MD
LG