গতকাল উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় দুই জনের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ার পর পুরো জেলার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বাভাবিক কর্যক্রম ব্যহত হয়ে পড়েছে। গাইবান্ধার গণমাধ্যমকর্মী জাহিদ খন্দকার পুরো জেলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, মানুষ চরম ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাচ্ছেনা কেউ।
এদিকে উত্তরাঞ্চলে বিদেশ ফেরতরা এখনো সতর্ক হচ্ছে না। তারা হোম কোয়ারেন্টিন উপেক্ষা করে পরিবার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে এবং হাটবাজরে ঘোরাফেরা করছেন। এতে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশ। উত্তরের জেলাগুলোতে করোনা মোকাবেলায় দৃশ্যমান কোন প্রস্ততি না থাকলেও বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, আমাদের মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মন্ত্রনালয়ের অনুমোতির অপেক্ষা করছি।
এদিকে করোনা আতঙ্ক বিরাজের মধ্যেই খেটে খাওয়া মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। সংসার চালানোর তাগিদেই তারা তাদের পেশাগত কাজে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু কাজ কম থাকায় তাদের চাহিদা মত রোজগার হচ্ছে না। ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ইতোমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
এদিকে করোনা আতঙ্ক পন্য পরিবহনে তেমন না পড়লেও উত্তরাঞ্চলের সব জেলা থেকেই দূরপাল্লার বাস সীমিত পরিসরে যাতায়াত করছে। যাত্রী কম থাকায় এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। কথা হয় বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দের সাথে, তিনি জানান, করোনার প্রভাব পন্যপরিবহনে না পড়লেও যাত্রী পরিবহনগুলো কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। তিনি কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবহণ শ্রমিকদের এই আপতকালীন সময়ে সহযোগিতা প্রদানের কথা জানান।
করোনার প্রভাব কি রুপ নিতে যাচ্ছে এর উত্তর মিলছে না কারো কাছেই। সবাই সবার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকার চেষ্টা করছেন এবং সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। কথা হয় আন্তর্জাতিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন এপেক্সক্লাব অব বগুড়ার সেচ্ছাসেবী আব্দুল ওয়াদুদ, গোলাম মোস্তফা জিয়ন, আরিফুর রহমানের সাথে। তারা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, তারা তাদের সাধ্যমত সাধারণ মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা অব্যহত রাখেছেন।
করোনার প্রভাব পড়েছে বাজারে। নিত্যপন্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজারসহ সুরক্ষার উপকরণসমূহ অধিকমূল্যে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক সময় তারা স্টকে রেখেই কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি করেছে।
বগুড়া সংবাদ্দাতা প্রতীক ওমরের রিপোর্ট।