লাদাখ সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ভারত-চীন ঠান্ডা যুদ্ধ চলছেই। কেউই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। চীনের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ উঠছে বারে বারেই। চীন-ভারত সীমান্ত সংঘাতের জেরে দুই দেশের মধ্যে সাইবার যুদ্ধও চলছে। গালওয়ানের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরেই শতাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। এখন ফের সীমান্তে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠের পরে চীনের স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি সম্পর্কে জানতে চাইল মোদী সরকার।
প্রথম ধাপে টিকটক-সহ ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পরেই কেন্দ্র জানিয়েছিল, আতসকাচের নীচে রয়েছে মোট ২৫০টি চীনা অ্যাপ। পূর্ব লাদাখে ফের চীন অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাতেই আরও ১১৮টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল মোদী সরকার। এবার নিশানায় চীনের কয়েকটি স্মার্টফোনের ব্র্যান্ড। তালিকায় রয়েছে ভিভো, অপ্পো, শাওমি ও ওয়ানপ্লাস।
চীনের এই ব্র্যান্ডগুলি এই মুহূর্তে ভারতের স্মার্টফোনের বাজারের প্রায় ৫০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। চীনের তৈরি যে কোনও ব্র্যান্ড ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য কতটা সুরক্ষিত সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই স্মার্টফোনগুলির প্রযুক্তি কেমন, কি কি ধরনের অ্যাপ ইনস্টল করা আছে, কি কি তথ্য আদানপ্রদান করা যায় ইত্যাদি সবকিছু বিশদে জানতে চেয়েছে মোদী সরকার।
ভারতের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, সীমান্তে অনুপ্রবেশে সফল হচ্ছে না চীনের সেনাবিহিনী। তাই ঘুরিয়ে সাইবার হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। এর আগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারায় চীনের অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, এই সব অ্যাপ এমন কাজকর্মে লিপ্ত, যা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা এবং জনস্বার্থের পরিপন্থী। কোটি কোটি ভারতীয় মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার স্বার্থেই সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। এবার ফের একবার নিরাপত্তার প্রসঙ্গই উঠে আসছে।
এইসব ব্র্যান্ডের মোবাইল মারফৎ ভারতীয় গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে, ভয়ঙ্কর ম্যালওয়ার ঢুকিয়ে সাইবার হামলা চালানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম শাখা থেকেও চীনের এই ব্র্যান্ডগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভারতের গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, দেশের প্রতিরক্ষা সবচেয়ে আগে। চীন যে বড়সড় সাইবার হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন আশঙ্কা আগেও করা হয়েছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাইবার নজরদারি সংস্থা সতর্ক করে বলেছিল, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির মদতে পুষ্ট অন্তত দু’টি হ্যাকার-গোষ্ঠী ভারতের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তাদের আরও আশঙ্কা ছিল, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে কোনও সরকারি সংস্থার ভুয়া পরিচয় দিয়ে গোপনে সাইবার ফাঁদ পাততে পারে চীন। ভুয়া ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করলে যাবতীয় ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যাবে।