অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিজেপি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করবে: রাস্ট্রদূত রিচার্ড সেলেস্তে


বিজেপি শাষনামল ১৯৯৮-২০০৪: অতীত, ভবিষ্যৎ - এই বিষয়ে এক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো শুক্রবার ওয়াশিংটনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ষ্ট্র্যাটেজিক এ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ষ্টাডিজ (CSIS) মিলনায়তনে। ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত রিচার্ড সেলেষ্তে-সহ আলোচনায় অংশ নেন বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ।
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা যদি নাও পায় বিজেপি ক্ষমতায় আ্সবে, এমন মন্তব্য করে প্যানেল আলোচনার অন্যতম প্রধান আলোচক, ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাস্ট্রের সাবেক রাস্ট্রদূত রিচার্ড সেলেস্তে বললেন; ভারতের আন্তর্জাতিক নীতিতে নতুন বিজেপি সরকার হয়ত ব্যাপক পরিবর্তন আনবে, কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বলে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করবে।

তিনি বলছিলেন, “আমি বিশ্বাস করি নতুন সরকার যে করেই হোক তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো এবং উন্নত সম্পর্ক বজায় রাখবেন। ভারতের জন্য তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এবং বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের মধ্যে অন্যতম প্রধান প্রতিবেশী”।

রাষ্ট্রদূত সেলেস্তে বলেন, ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করার কারণে দেশটির আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক ক্ষেত্রের নানা বিষয় সম্পর্কে তার বেশ ষ্পষ্ট ধারণা হয়েছে। সেই কারনে তিনি মনে করেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। আর এবার ক্ষমতায় আসলে বিজেপির নেতৃত্বের পরিবর্তনের সেই ইতিবাচক দিক আরো স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

সেলেস্তে বলছিলেন, “আমি মনে করি নতুন সরকার, তা সে মোদির নেতৃত্বে হোক বা কোয়ালিশনে হোক, প্রতিবেশী রাষ্টসমূহের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক সৃষ্টি করবেন”।

প্যানেল আলোচনায় বক্তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল, আগামী দু সপ্তাহে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হবার পর যে নতুন সরকার গঠিত হবে তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে সেটিকে কেন্দ্র করেই।

তারা বলেন নির্বাচনে প্রধান দুই দল ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবং বিজেপি যে সকল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার মধ্যে দুই দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেই যুক্তরাস্ট্র-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বিদেশী বিনিয়োগ, কর নীতিমালা, আন্তর্জাতিক বানিজ্য, পেটেন্ট এবং প্রতিরক্ষা বিষয় রয়েছে। তারা বলেন দুই দলই প্রায় সমানতালে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা বললেও, সরকার গঠিত হবার পর নতুন সরকারের প্রনীত নীতিমালা না ঠিক করা পর্যন্ত স্পষ্ট বোঝা যাবে না কি ঘটবে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিজেপির অতীত অভিজ্ঞতার কারনে এবার ক্ষমতায় আসলে কুটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে এবং বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি বানিজ্যও বৃদ্ধি ঘটানোর চেষ্টা করবে।

আলোচনা শেষে প্রশ্নত্তোর পর্বে এজন বলেন পাকিস্তানে মোদি বিরোধী প্রচারণা তুঙ্গে। এই অবস্থায় মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় এলে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অবনতির দিকে যাবে কিনা এ প্রশ্ন করেন তিনি।

উত্তরে বক্তারা বলেন, মোদির বিরুদ্ধে যতোই প্রচারণা চলুক, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত সুসম্পর্ক স্থাপন আর আফগানিস্তানের নির্বাচন শেষে ঐ অঞ্চলের স্থিতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত পাকিস্তান যৌথভাবেই প্রচেষ্টা চালাবে বলে তাদের বিশ্বাস।

আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন অলব্রাইট স্টোব্রিজ গ্রুপের সিনিয়র পরিচালক ও যুক্তরাস্ট্রের সাবেক সহকারী মন্ত্রী রেমন্ড ভিকারী, যুক্তরাস্ট্রের দক্ষিন এশিয়া বিষয়ক সাবেক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাম্বাসেডর কার্ল ইন্ডারফার্থ ও সিএসআইএস এর সিনিয়র এ্যাসোসিয়েট ডনাল্ড ক্যাম্প। সঞ্চালন করেন সিএসআইএস ওয়াধওয়ানি চেয়ারস ইন ইউএস ইন্ডিয়া পলিসি স্টাডিজর রিচার্ড রসো।
XS
SM
MD
LG