প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ৩০ জানুয়ারী যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষন দেবেন রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতির বিবরণ বিষয়ে যা কিনা স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন নামে চিহ্নিত। এ ভাষনে দু’ হাজার আঠারো সালে দেশের অভ্যন্তরীন এবং বৈদেশিক নিতিমালা কেমন হবে তারই বিবরণ দেবেন তিনি এবং দেশ বিদেশের দর্শক-শ্রোতা তা শুনবেন-দেখবেন টিভির পর্দায় – বেতার তরঙ্গে।
ক্ষমতারোহনের এক বছর অতিক্রান্ত হলো এই সবেই- দেশ পরিচালনার বিতর্কিত এই সময়টাতে কর ছাঁঢ়াই প্রস্তাব নিয়ে তাঁর যে জিত হয়েছে, তা নিয়ে এ ভাষনে তিনি জন সমর্থন চারিয়ে তোলার প্রয়াস চালাবেন স্বভাবতই এবং বিবরণ তুলে ধরবেন তিনি সেই সময়কালের যখন কিনা বিভিন্ন প্রশ্নে-ইস্যুতে উত্থিত নানান ধরনের তর্ক-বিতর্ক, বাক বিতন্ডায়, তাঁর প্রতি জন সমর্থনের মাত্রা নিম্মমুখি হয়েছে বেশ অনেকখানিই - জনমত সমিক্ষার মানদন্ডে সেটাই পরিলক্ষিত হয়েছে। ঐতিহাসিক ধরাবাহিকতার নিরিখে যেমনটি কিনা বড়ো একটা দেখা যায় না বলেই ধারণা অনেকের। এমোনটাই মূল্যায়ন ভয়েস অফ আমেরিকার ন্যাশনাল করেসপনডেন্ট জিম মেলৌনের। জিম মেলৌনের ঐ প্রতিবেদনের সূচনা পর্বেই শোনানো হ’চ্ছে গেলো বছরের যৌথ কংগ্রেস অধিবেশনে যে ভাষন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তারই অংশবিশেষ । ঐ ভাষনে তিনি বলেছিলেন – আজ আমি এসেছি ঐক্য আর শক্তি-সংহতির বারতা নিয়ে – আর এ বানী আমার হৃদয়ের অন্তস্থল হতে উৎসারিত হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের গত বছরের ঐ ভাষনকে ঠিক স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষন বা রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতির বিবরণ বিষয়ক ভাষন বলে বিবেচনা করা হয় না, একারণে যে ঐ সময়টাতে তাঁর ক্ষমতা আরোহনের গুটি কয়েক সপ্তাহই অতিক্রান্ত হয়েছিলো মাত্র।
তবে এবছর যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতির দারুন মজবুতির একখানা চিত্র তুলে ধরবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর এই স্টেট অফ দ্য ইউনিয়নে, তেমনটাই ধরণা করা হচ্ছে।
যেমনটি কিনা আমরা তাঁর কণ্ঠেই ধ্বনিত হতে শুনেছি এই হালেই। বলেন তিনি- দেশ আমাদের ভালোই তো করছে। আগের তুলনায় অর্থনীতি আমাদের শ্রেষ্ঠতম অবয়বে বিরাজ করছে। কর্ম সংস্থান পানে নজর দিন- দেখবেন স্টক মার্কেট সর্বকালের উচ্চতায় গিয়ে পৌঁচেছে।
তবে অর্থনিতির এ রমরমা পরিস্থিতি তাঁর প্রতি জন সমর্থনের মাত্রাকে ওপরবাগে টেনে তুলতে পারেনি।
ডেমোক্র্যাটিক দলিয়দের অভিযোগ যে তিনি অগ্রাধিকার নির্ধারণ বিষয়ে খুব একটা স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিতে পারছেন না। ডেমোক্র্যাটিক দলিয় শীর্ষ সেনেট সদস্য চাক শুমার বলেন- আমাদের রেপালিকান দলিয় সদস্যবৃন্দ নিজেদের থেকে এগুতে চাইছেন না। প্রেসিডেন্টের ভয়ে ভীত তাঁরা। তিনি কি করতে চান তারই অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। অথচ উনি তাঁদেরকে কিছু বলতে চান না- উনি বলেন, আপনারা নিজেরা যা করবার করুন। এভাবে আমরা যেন পক্ষাঘাতদুষ্ট হয়ে পড়ছি। বলেন চাক শুমার।
রেপাবলিকান দলিয় নেতা মর্টন ব্ল্যাকওয়েল বলেন– "আমি স্থির নিশ্চিত যে জনমত সমিক্ষার রায় চড়বে ওপরপানে- প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা বাড়বে নিশ্চয়।
ডেমোক্র্যাট দলিয় জিম কেসলার বলেন- এসব ভাষন-বক্তৃতায় ভোটারদের কাছে নতুন করে জানান দেওয়া সম্ভব হয়। তবে ভোটারদের অনেকেরই ইতিমধ্যেই স্থির প্রতিতি জন্মে গিয়েছে।
ভাষনে এবার রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক তদন্তানুসন্ধান নিয়ে বড়ো ধরনের কিছু প্রক্ষেপণ থাকবে। প্রেসিডেন্ট ঐ তদন্তানুসন্ধান সংশ্লিষ্ট অভিশংসক রবার্ট মৌলারকে গেলো বছর বরখাস্ত করার নির্দেশ দান করেন বলে যে খবরাখবর প্রকাশ পায় এ ভাষনে সে বিষয়েরও উল্লেখ থাকতে পারে। এ বছরের মেয়াদ মধ্যবর্তী কংগ্রেসীয় নির্বাচনে এটা একটা ইস্যু হতে পারে। বললেন – ব্রুকিংস ইনস্টিটিটিউশানের জন হুডাক।
অর্থনীতি ছাড়াও বানিজ্য এবং অভিবাসন এবং বৈদেশিক নীতির রদবদল যেমন উত্তর কোরিয়া, ইরান ও আফগানিস্তানেরও উল্লেখ থাকতে পারে এবারকার ভাষনে।