ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ নিশ্চিত হলেও
শিশুর বাড়তি খাবার এখনও চ্যালেঞ্জ
আঙ্গুর নাহার মন্টি
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা
শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘ব্রেস্টফিডিং: এ উইনিং গোল ফর লাইফ’ বা ‘মায়ের দুধ আর ঘরের তৈরী খাবার: লক্ষ্য হবে সফল জীবন পাবার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০১৪।
দেশে কর্মজীবী মায়েদের সংখ্যা বাড়লেও সর্বশেষ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১১ অনুসারে, এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং অর্থাৎ জন্মের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার অনেক বেড়ে ৪৩-৪৫ শতাংশ থেকে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএসএআইডি’র সহায়তায় পরিচালিত ‘শিখা’ প্রকল্পের প্রধান সুমিত্র রায় বলেন, বাংলাদেশ হাউজহোল্ড সার্ভে ডাটা ২০১১ তে আমরা কিন্তু এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং-এ খুব ভাল করেছি। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিংয়ে আমরা ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছি, যা গত ১৫ বছর ধরে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশে উঠানামা করছিল। এর মানে হচ্ছে গত ৪/৫ বছরে এক্ষেত্রে প্রচারণা এতো ভাল হয়েছে এবং কর্মসূচীটি কম্যুনিটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; ফলে তারা ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে এবং প্র্যাক্টিসও করেছে।
ছয়মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার বাড়লেও বাংলাদেশের শিশুদের সাত মাস বয়স থেকে বাড়তি খাবারের বিষয়টা চ্যালেঞ্জই রয়ে গেছে। এখনও মায়েরা জানেন না, তাদের সাত মাস থেকে ২৪ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে কি ধরণের খাবার দেয়া দরকার। এ প্রসঙ্গে সুমিত্র রায় বলেন, মায়েরা এখন শিশুকে এক ধরণের খাবার দিচ্ছেন। যেমন সুজি বা খিচুঁড়ি করে খাইয়ে দেন। তা না করে শিশুদের আমিষসহ বিভিন্ন ধরণের খাবার দিতে হবে। সাত মাস বয়স থেকে শিশুকে মাছ, ডিম, কলিজা, ডাল ইত্যাদি ভাতের সঙ্গে চটকে খাওয়াতে হবে, শিশুর বয়স অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণে। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজ করার রয়েছে। ইউএসএআইডি’র সহায়তায় ‘শিখা’ প্রকল্প বর্তমানে বরিশাল ও খুলনায় এই কাজটি শুরু করছে।
প্রায় দুই যুগ আগে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৫৪তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে শিশুকে জন্মের প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ শিশুর জন্ম-পরবর্তী প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ এবং এর পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি সহায়ক বাড়তি খাবার খাওয়ানোর সরকারি আদেশ জারি হয়। সেই থেকে ইউএসএআইডিসহ বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী বাংলাদেশে এ বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।