উত্তপ্ত, জমজমাট আর তিক্ত এক বাহাসে লিপ্ত হন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইম্যানুয়েল ম্যাক্রন ও ম্যারিন লা পেন। রোববার দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণের আগে অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিলেন চরম আক্রমনাত্মক। তারা একে অপরকে আবর্জনা, পরজীবী ও মিথ্যাবাদী বলে বর্ণনা করেন। দুইজন উপস্থাপক এক পর্যায়ে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। ঘৃণায় ভরপুর টানা আড়াই ঘন্টার বিতর্ক উপভোগ করেন প্রায় দুই কোটি মানুষ।
গতরাতের বিতর্কের পর অনুষ্ঠিত জনমত জরিপে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রন এগিয়ে রয়েছেন। দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর এই বিতর্ক নানাদিক থেকেই ছিল ব্যতিক্রম। কট্টরপন্থী লা পেনের মুখোমুখি হন মূলধারার রাজনীতির বাইরে থেকে এসে চমক সৃষ্টি করা ইম্যানুয়েল ম্যাক্রন। প্রথম দফার ভোটে ম্যাক্রন সামান্য ব্যবধানে জয়ী হন। তবে দ্বিতীয় দফার ভোটের আগ দিয়ে মূলধারার দুই রাজনৈতিক দল সোশ্যালিস্ট এবং কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থন পেয়েছেন তিনি। ম্যাক্রন-পেনের বিতর্কে উঠে আসে ফ্রান্সের ভবিষ্যত, ইউরো প্রসঙ্গ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল। ম্যাক্রন বলেন, লা পেন ক্ষমতায় গেলে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাবেন।
অন্যদিকে, লা পেনের দাবি ম্যাক্রন সন্ত্রাসীদের প্রতি দুর্বল হবেন। এ অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেন ম্যাক্রন। তিনি বলেন, লা পেনের রয়েছে জাতীয়তাবাদের উচ্চাকাঙ্খী বাসনা। এ জন্য তাকে প্রচুর অর্থ ধার করতে হবে। জবাবে ম্যাক্রনকে ‘অনিয়ন্ত্রিত বিশ্বায়নের’ পক্ষের লোক বলে অভিহিত করেন লা পেন। বিতর্কের এক পর্যায়ে লা পেনকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হওয়ার অযোগ্য বলে দাবি করেন ম্যাক্রন।
জবাবে লা পেন তার প্রতিপক্ষকে বড় বড় ব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সাম্প্রদায়িকতার এক ঘৃণ্য ব্যক্তি বলে আখ্যায়িত করেন। লা পেন নিজেকে কট্টর জাতীয়তাবাদী হিসেবে উপস্থাপন করলেও তার প্রচারণায় স্থান পেয়েছে মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা শার্ট। টিভি বিতর্কের পর এক জনমত জরিপে দেখা যায় শতকরা ৬৩ ভাগ ভোটার মনে করেন ম্যাক্রন বিতর্কে লা পেনের চেয়ে ভাল করেছেন। অপর এক জরিপ বলছে, ইম্যানুয়েল ম্যাক্রনকে সমর্থন করছেন ৫৯ ভাগ ভোটার। লা পেনকে সমর্থন করছেন ৪১ ভাগ। লন্ডন থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী