অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

জি-২০ সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে আলোচনা


জার্মানীর হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ফলাফল নিয়েই যেনো মানুষের আগ্রহ বেশী। শুক্রবার দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন আলোচনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টির গুরুত্ব দিয়েছেন সবচেয়ে বেশী।

টিলারসন বলেন যতোটা আশা করা হয়েছিল, বৈঠক তার চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। ভালোর ব্যাখ্যা দেন তিনি ‘ক্লিয়ার পজিটিভ কেমিস্ট্রি’; অর্থাৎ দুই নেতার মধ্যে পরিচ্ছন্ন ইতিবাচক মনোভাব ছিল, বলে। আমাদের ইউরোপ সংবাদদাতা লুইস রামিরেজ হামুর্গ থেকে পাঠানো তথ্যে বলেন জি-২০ সম্মেলনের সকল কর্মসূচীর মধ্যে দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল সবার। ৩০ মিনিটের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু হয়েছে সোয়া দুই ঘন্টা।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে বহু ইতিবাচক ঘটনা ঘটছে। পুতিন ট্রাম্পকে বলেন তিনি তাঁর সঙ্গে মিলিত হতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। ট্রাম্প বলেন তিনি সম্মানীত।

বৈঠকের ফলাফল হচ্ছে সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতির আংশিক চুক্তি; যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের কিছু বিষয় পরিস্কার হওয়া। রুশ কর্মকর্তারা বলেন ঐ অভিযোগের সত্যতা কি, কিসের ভিত্তিতে তারা রাশিয়াকে নির্বাচনের হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলছেন পুতিন, ট্রাম্পকে তা দেখাতে বলেন।

২০ জানুয়ারি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রথম দুই নেতার সাক্ষাৎ হল। ইউক্রেন, সিরিয়াসহ অন্যান্য সমস্যা এবং কিছু দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে তাদের কথা হয়। আলোচনায় উঠে আসে সাইবার নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গও।

পুতিনের সঙ্গে আলোচনার শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা খুবই ভালো আলোচনা করেছি। এখনও আমরা আলোচনা করব এবং সেটি চলতে থাকবে। আমরা রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং সবার জন্যই খুবই ইতিবাচক কিছু ঘটার অপেক্ষায় আছি।”

বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দেন কিছুটা শংকা ও উদ্বেগ নিয়ে। বৈশ্বিক বানিজ্য নীতিমালা স্পষ্ট করা; জলবায়ু সংকট নিরসণে আলোচনা, সন্ত্রাস দমন এসব নিয়েই চলে জি-২০ সম্মেলনের প্রথম দিনের আলোচনা।

আয়োজক দেশ জার্মানীর চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন সম্মেলন নিয়ে তিনি খুব বেশী আশাবাদী না হলেও একেবারে নিরাশ নন।

“আমরা সবাই জানি বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলো কি। আমরা এও জানি সময় কম এসব সংকট সমাধানের। এজন্য আমরা এই দুই দিনেই যতোটা সম্ভব সংকটগুলো মোকাবেলায় দ্রুত ও দক্ষভাবে কি কি করা যায় সেসব নিয়ে সমঝোতায় আসার চেষ্টা করছি”।

ডাউনটাউন হামবুর্গে সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের দাবী জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নসহ নানা বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতামত তারা মানেন না। বিক্ষোভকারীরা এ্যাতোটাই ক্ষুব্ধ যে তারা ভাংচুর গাড়ী পোড়ানোর মত ঘটনা ঘটিয়েছেন। জার্মানীর পুলিশকে এর আগে এ্যাতোবড় ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হয়রনি বলেও অনেকে মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প পুতিন বৈঠক নিয়ে শুক্রবার জি-২০ সম্মেলন মূল কর্মসূচী খানিকটি চাপা পড়লেও বানিজ্য, জলবায়ু, মন্ত্রাস দমন, উত্তর কোরিয়া নিয়ে শনিবার আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি বৈটক হচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং জাপানী প্রধানমন্ত্রী শিনজোর আবের সঙ্গে।

জি -২০ সম্মেলন ও ট্রাম্প পুতিন বৈঠক সম্পর্কে বিশ্লেষণ করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সমিতির সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান।

XS
SM
MD
LG