১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে আরম্ভ হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা। মানবজাতির স্মরণ কালের ইতিহাসে যার নজির নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে কখনও ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করতে পারতনা যদি না তাদের সাথে এদেশের রাজাকাররা প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা না করতো।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাবার জন্য, গনহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত সম্পন্নকরন এবং শহীদদের আত্মদানের চেতনায় নিজেদের বোধ শাণিত করার জন্য শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সূচনা করেছিলেন গণহত্যার কালরাত্রি পালনের কর্মসূচি। গত ২৪ বছর ২৫শে মার্চ রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিল নিয়ে জগন্নাথ হলের বদ্ধ ভুমিতে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শহারিয়ার কবির বলেন, আজ ২৫শে মার্চ ২০১৭, ৪৭তম গণ হত্যা দিবস- স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ দিবসটি সরকারী ভাবে পালন করা হল। তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘ আন্দলনের ধারাবাহিকতায় গত ১১ই মার্চ জাতীয় সংসদের সর্বসম্মতভাবে ২৫ মার্চ "গণহত্যা দিবস" হিসেবে পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী সহ সকল সংসদ নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশী মূল্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
সেদিনের সেই বিভীষিকাময় হত্যাজজ্ঞের কথা স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মেয়ে ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেন, বিকট গুলির আওয়াজ শুনে দেখতে পাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমার বাবাকে গুলি করেছে।
এ দিনে শহীদদের স্মরণ করে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এ সময় ডি এম পি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ২৫শে মার্চের সেই ভয়াল কালরাত্রির কথা উপস্থিত বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন।
৩০ লক্ষ শহীদের স্মৃতি চির সবুজ রাখার জন্য ৩০ লক্ষ বৃক্ষ রোপণের কর্মসূচি শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বঙ্গভবনে আনুষ্ঠানিক ভাবে ২৫ টি বৃক্ষ রোপণ করে উদ্ভোধন করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাত্রে এ দেশে নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নৃশংস গণ হত্যা চালিয়ে ছিল তা পৃথিবীতে বিরল।
এ সময় ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন স্রিংলা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,"25th March is day of Genocide of Bangladesh. This is quite major milestone.
এ ছাড়া, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, শহিদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সার তার স্মৃতি তুলে ধরেন।
শহীদদের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। জাতি হিসেবে আমরা তাদের কাছে চির ঋণী। সকলের প্রত্যাশা বিশ্ব শান্তি ও মানবতার মুক্তি। নাসরিন হুদা বিথী।