বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধর করে জখম ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমেকে তাঁর এক সহযোগীসহ সোমবার আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ইরফান সেলিম নিজেই একজন জনপ্রতিনিধি বলে জানা গেছে যিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। শুক্রবার রাতে রাজধানী ঢাকার কলাবাগান এলাকায় সঙ্ঘটিত ওই ঘটনায় সোমবার সকালে ভুক্ত ভুগি নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান বেআইনিভাবে পথরোধ করে সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর, জখম ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে ধানমণ্ডি থানায় ইরফান সেলিম ও তাঁর ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর আজ দুপুরে র্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন বা র্যাব ঢাকার সোয়ারি ঘাটের দেবিদাস লেনে হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে এবং মামলার প্রধান আসামী ইরফান এবং তাঁর সহযোগী জাহিদকে আটক করে। নয় তলা বাড়িটির তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় যেখানে ইরফান থাকেন সেখানে তল্লাশি চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি বলেন আগ্নেয়াস্ত্রের কোনও লাইসেন্স নাই এবং ওয়াকিটকিগুলোও অবৈধ।
এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেছেন ঘটনার সাথে যেই জড়িত থাকনা কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এদিকে, শুক্রবার রাতে সস্ত্রীক মোটর বাইকে করে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ কলাবাগান এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সংসদ সদস্যের ষ্টিকার লাগানো একটি জিপ বাইকটিকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনার পর তিনি বাইক থামিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করলে জিপটি থেকে দুই জন নেমে তাঁকে মারধর করে। এ সময় এক পথচারী এ ঘটনার ভিডিও ধারন করেন যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিওতে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায় এবং তাকে বলেতে শুনা যায় তাঁরা তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। পরে পুলিশ গাড়িটি চালক সহ আটক করে। তবে গাড়ির অন্যান্য যাত্রীরা পালিয়ে যায়।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে বেআইনি ভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ইরফান এবং তার সহযোগী জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।