অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

‘ট্রিক অর ট্রিটের’ আমেজে আমেরিকা


অক্টোবর মাসের এই শেষ সপ্তাহে আমেরিকায় ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে ‘ট্রিক আর ট্রিটের’ সাড়া পড়ে যায়। অর্থাৎ সেই ভূত-প্রেতের সাজ আর ধ্বনি নিয়ে হ্যালোইন উৎসব। এই দিনে সন্ধ্যার দিকে বড়দের হাত ধরে শিশু কিশোররা নানা পোশাকে সেজে, ঘরে ঘরে গিয়ে ঝুলি নিয়ে দাঁড়ায়। ভয়েস অফ আমেরিকার ডেবোরা ব্লকের প্রতিবেদন থেকে সে কথাই শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:13 0:00

হ্যালোইনের মুখোশ-অদ্ভুত সব সাজ-পোশাক, টুপি, ছড়ি কিম্বা তলোয়ার এইসব নানা জিনিষে ভরে রয়েছে দোকানপাট। যেমন ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘টোটাল ফ্রাইট’ মানে সম্পূর্ণ ভয়ালো নামের বিশাল দোকানে কি যে নেই বলা কঠিন। শিশু কিশোরদের চোখ ঠিকই গিয়ে পড়ে তাদের পছন্দের জিনিষের ওপর। ৯ বছরের রবিনসান আন্দিনো জানালো সে বাড়ী গিয়ে দরজায় টোকা দিয়ে আবার লুকিয়ে যাবে –

‘আমি দরজা ধাক্কা দিয়েই লুকিয়ে যাবো, এবং তাদেরকে ভয় দেখাবো। তারপর তারা দরজা খুলে চকোলেট-লজেন্স দেবে’।

তবে আজকাল হ্যালোইন শুধুমাত্র বাচ্চাদের জন্য নয়। টোটাল ফ্রাইট দোকানের কর্মী লরেঞ্জো বলেন, বড়রা এবং পরিবারের অনেকেই এই মজার উৎসবে যোগ দেন।

ক্যাথরিন কুও আজব সাজে সাজতে ভালবাসে। তার কথা –

‘আমি সাজগোজ করে তারপর ট্রিক আর ট্রিটে যেতে ভালবাসি। তবে আজকাল আর তা হয় না কারণ আমি এখন বড় হয়ে গিয়েছি’।

সাজ পোশাকের অন্তঃ নেই। সেই ব্যাটম্যানের পোশাক থেকে নিযে আজকের দিনের মহানায়ক, কমিক বইএর চরিত্র, ছায়াছবির চরিত্রের সব পোশাক। লরেঞ্জো বলেন –

‘অনেক পোশাক ঠিক ছায়াছবির চরিত্রের কোন পোশাকের মত, সিনেমায় দেখা সব পোশাক তৈরী করা হয়েছে’।

স্টার ওয়ার্স ছবির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? এক দশকের বেশী সময় ধরেই শিশু কিশোরদের মাতিয়ে রেখেছে। আর সামনের ডিসেম্বর মাসেই স্টার ওয়ার্সের নতুন অধ্যায়ের ছবি আসছে। ওই সিনেমার খলনায়ক ডার্থ ভাডের পোশাক হ্যাঁ, তা তো থাকতেই হবে।

ওদিকে রাজনীতিকরাও বাদ পড়ছেন না। না, তারা হ্যালোইনের পোশাক পরে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন না, তাদের মত সেজে ট্রিক আর ট্রিটের দল পথে নামছে। যেমন এ বছর হিলারী ক্লিন্টন আর ডনাল্ড ট্রাম্পের সাজ দেখত পাবেন অনেক শহরে -

‘ক্লিন্টনের মত সাজ এবার শীর্ষে সেইসঙ্গে ট্রাম্পও আছেন। আমাদের দোকানে ডনাল্ড ট্রাম্পের মুখোশ সব বিক্রী হয়ে গেছে। হ্যাঁ, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মুখোশও খুব জনপ্রিয়। আরও আছে পাম্পকিন ওবামার সাজ’।

কিছুদিন আগেই ফরাসী কলেজ ছাত্র রায়েদ বোখারী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে এসেছে। এ হচ্ছে তার প্রথম হ্যালোইন উৎসবের অভিজ্ঞতা। প্রেতাত্মার সাজে সাজবে যা সত্যি না হলেও লোকে দেখে যেন আঁৎকে ওঠে।

একটা কথা কেবল ছেলেরাই নয়, মেয়েরাও এমন সাজে সাজতে চায় যা দেখে সবাই যেন ভয় পায়। মার্গারেট ব্যাটন কিছুটা ভিন্ন সাজের কথা চিন্তা করেছে –

‘আমি কংকালের মত সাজবো কারণ আমি ট্রাপিজ দেখাতে চাই, তার মানে কংকাল সেজে উড়বো। এবং এই সাজে আমার কসরৎ দেখানোটা সহজ হবে’।

আমেরিকার পাড়ায় পাড়ায় কেউ আকাশে উড়বে, কেউবা বাড়ী বাড়ী গিয়ে দরজায় টোকা দিয়ে ট্রিক আর ট্রিট করবে আবার অনেকে হ্যালোইনের পার্টিতে গান বাজনায় মেতে উঠবে। যাই বলুন কেন নানা সাজের ‘হ্যালোইন’ আমেরিকানদের এক মনমাতানো উৎসব।

XS
SM
MD
LG