বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ নানামুখী চাপের মধ্যে। একদিকে সরকার, অন্যদিকে সরকারের বাইরের চাপ। জঙ্গি গোষ্ঠীর হত্যা ও হামলার হুমকি। এর ফলে নাগরিক সমাজের কার্যক্রম অনেকটা সীমিত। একই সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতাও। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বার্ষিক রিপোর্টে ঠিক এভাবেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করেছে। ২০১৭ সালে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রবাহের ওপর ভিত্তি করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বাংলাদেশ সরকার ভিন্ন মতাবলম্বী কিংবা সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে অতিমাত্রায় আইন প্রয়োগ করছে। সমালোচকদের শাস্তি দিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ব্যবহার করছে। ৫৭ ধারার স্থলে ডিজিটাল সিকিউরিটিজ অ্যাক্টের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই আইনে আরো কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এতে জাতীয় নিরাপত্তা, মানহানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সঙ্কট, নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ, তাদের দায়মুক্তি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের অধিকারসহ নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। জোরপূর্বক গুমের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড ইন ভলান্টারি ডিজএ্যাপেয়ারেন্সেস ও হিউম্যান রাইটস কমিশন। এসব ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও জবাবদিহিতার ঘাটতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যদিও বাংলাদেশ সরকার এই বিবৃতিগুলো অবজ্ঞা করেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সফরের জন্য বার বার অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোটিয়র ও অফিস অব দ্যা হাই কমিশন ফর হিউম্যান রাইটস। তাতে কোন সাড়া মেলেনি। রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দায়মুক্তির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তারা ভয়াবহভাবে আইন লঙ্ঘন করছে। এর মধ্যে রয়েছে। খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার, নির্যাতন, জোরপূর্বক গুম ও বিচার বহির্ভুত হত্যাকা-। বিরোধী নেতা-কর্মী ও সন্দেহভাজন উগ্রপন্থিদের গ্রেপ্তারও অব্যাহত রাখে। প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে বলা হয়, এমনিতেই বাংলাদেশে সম্পদের ঘাটতি রয়েছে। তার ওপর কমপক্ষে ৬ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার চাপে অপ্রত্যাশিত এক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী।