অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কলকাতায় প্রবল বেগে ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে


প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পান আজ বিকেল চারটে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপে ঢুকে স্থলভূমির ওপর আছড়ে পড়েছে। প্রায় দেড়শো কিলোমিটার গতিতে আসা ঝড়ের আঘাতে সাগরদ্বীপের ও তার আশেপাশের এলাকার, বিশেষ করে সুন্দরবনের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বিশেষ করে শঙ্কিত বোধ করছেন কারণ ঘূর্ণিঝড়ের থেকে বাঁচতে সুন্দরবনের বাঘেরা যদি লোকালয়ে চলে আসে তাহলে সেটা খুবই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে। ভারতের সুন্দরবনে এই মুহূর্তে ৯৬টি বাঘ আছে। তার মধ্যে ৭০টি আছে গহন অরণ্যে আর বাকি ২৬টি একটু বাইরের দিকের জঙ্গলে। সেগুলিরই লোকালয়ে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই ওখানে বনরক্ষীরা রাইফেল এবং ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে সবসময় সতর্ক ভাবে পাহারা দিচ্ছেন।

তবে আম্পান এই রাজ্যের মাটি ছোঁয়ার আগে থেকেই কলকাতার উপর দিয়ে প্রবল বেগে ঝড় এবং তুমুল বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ওদিকে দীঘা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল অঞ্চলে তীব্র জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। একের পর এক গাছ ভেঙে পড়ছে, বড় বড় সাইনবোর্ড উপড়ে পড়ছে‌। প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছে কলকাতাতেও। এখন অবধি পাওয়া হিসেবে জানা গেছে দক্ষিণ কলকাতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭টি বড় গাছ ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসেব পাওয়া যায়নি, কারণ এখনও এই ঝড়ের তান্ডব চলছে। আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী আজ সারারাত ধরে তাণ্ডব চলবে এবং কখনো কখনো ঝড়ের গতি খুব বেশি রকমের বাড়তে পারে।

আজ সকাল থেকেই পুলিশ বার বার মাইকে ঘোষণা করে সাবধান করে দিয়েছে, পাড়ায় পাড়ায় পুলিশের গাড়ি এসে কাউকে বের না হতে বলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন নবান্নে বসে পুরো পরিস্থিতি তদারক করছেন। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি যেসব জায়গায় ঝড়ের তান্ডব বেশি হতে পারে বলে মনে হয়েছে সেই সব জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া কলকাতা বিমানবন্দর আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৫টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তার পরবর্তী কালে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ সকালে দশটি ছোট বিমান কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, কারণ সেগুলি ঝড়ের ধাক্কায় বড় বিমানের সঙ্গে ধাক্কা লাগাতে পারতো তাতে ক্ষতি হতো।

রেলমন্ত্রক জানিয়েছে দিল্লি থেকে যে রাজধানী স্পেশাল আজ হাওড়া স্টেশনে এসে পৌঁছনোর কথা ছিল সেটি ওখান থেকে ছাড়াই হয়নি। তবে শ্রমিক স্পেশাল আপাতত চলবে। যদি অবস্থা খারাপ মনে হয় তাহলে সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়বে বলে জানানো হয়েছে।ট্রেনগুলোকে আপাতত চালানো হচ্ছে কিন্তু খুব সতর্কতার সঙ্গে। কলকাতাায় এই মুহূর্তে ঝড়ের গতিবেগ ১০০ কিলোমিটারের বেশি। পশ্চিমবঙ্গের ছ'টি জেলায় এটির অভিঘাত সবচেয়ে তীব্র হবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে যার মধ্যে কলকাতা ছাড়াও আছে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। আজ ঝড়ের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকেও রাস্তায় বের হতে নিষেধ করেছেন। খুব আপৎকালীন ছাড়া অন্য কোন বিভাগকে বাইরে থাকতে বারণ করা হয়েছে। কলকাতা এবং হাওড়ার সবকটি উড়ালপুল ঝড়ের আগে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে ঝড়ে উড়ালপুল দিয়ে গাড়ি চলাচল করে নিজেদের বিপদ ডেকে আনতে না পারে। সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও ক্ষয়ক্ষতি কতটা কি হয়েছে সেটা এই মুহূর্তে বোঝা যাচ্ছে না। অন্তত আগামীকাল সকালের আগে পুরো ছবিটা পাওয়া যাবে না।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:47 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG