ভারতের বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন বিল নিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আর এর প্রকাশ ঘটেছে শীর্ষ স্থানীয় তিনজন সংখ্যালঘু নেতার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত ও রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য মনে করেন ভারত সরকারের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো বা পশ্চিম এশিয়ার কিছু দেশের মতো ইসলামিক দেশে পরিণত করার পথ খুলে দেবে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ফার্স্টপোস্টকে তারা বলেছেন, যদি এই আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য হয় প্রতিবেশী দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের আইনগত নিরাপত্তা দেয়া তাহলে এর বিপরীতটা ঘটতে পারে। এতে করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থান আরো দুর্বল হবে।
বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ভারতের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন বিলকে দু’দিকে ধারসম্পন্ন তরবারির সঙ্গে তুলনা করেছেন। বলেছেন, সাধারণভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দুরা তাদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এখন আইনগত এই ব্যবস্থা নেয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে যে বৈষম্য রয়েছে তা হাল্কা করে দেবে। এক শ্রেণীর মানুষ যারা স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারা বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভারতে তাড়িয়ে দেয়ার অজুহাত হিসেবে নিতে পারে।
রানা দাশ গুপ্তের মনোভাবও প্রায় একই। তিনি বলেছেন, যদি নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন বিলটি ভারতের পার্লামেন্ট পাস করে তাহলে সাম্প্রদায়িক ও উগ্রবাদী শক্তি সংখ্যালঘুদের তাড়াতে উৎসাহিত করবে। তাছাড়া এই বিলটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বিপদে ফেলবে।
ঐক্য ন্যাপের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য মনে করেন, এই বিল পাস হলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকে উস্কে দেয়ার একটি ঝুঁকি তৈরি হবে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যারা নির্যাতনের অভিযোগে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার জন্যই এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছে।