অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কোভিডের পাশাপাশি ডেঙ্গু; আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়ালো দিল্লীতে


নয়া দিল্লীর একটি সরকারি হাসপাতালের স্ট্রেচারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের দেখা যাচ্ছে। (ফাইল ফটো- অনুস্রি ফাদনাভিস/ রয়টার্স)
নয়া দিল্লীর একটি সরকারি হাসপাতালের স্ট্রেচারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের দেখা যাচ্ছে। (ফাইল ফটো- অনুস্রি ফাদনাভিস/ রয়টার্স)

দিল্লীতে একটানা বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারের রিপোর্ট বলছে, ভারতের রাজধানী দিল্লীতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৭১ জন। সেপ্টেম্বরে এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২১৭। অক্টোবরে তা বেড়ে হয় ১ হাজার ১৯৬।

রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের যা সংখ্যা, তা এখনও পর্য্ন্ত গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লীতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। ফেব্রুয়ারিতে ২, মার্চে ৫, এপ্রিলে ১০, মে মাসে ১২, জুনে ৭, জুলাইতে ১৬-- এইভাবে চড়তে থাকে ডেঙ্গির গ্রাফ।

তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে সারা বছরের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৯৫, ২০১৯ সালে ১ হাজার ৬৯ এবং ২০২০ সালে ৬১২, সেখানে এই বছরেই এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৭০৮ যা ২০১৮ সালের পর সবচেয়ে বেশি। দিল্লীতে সোমবার ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।

দিল্লীর গঙ্গারাম হাসপাতালের একজন সিনিয়র ডাক্তারের মতে, গত দু'তিন বছরের তুলনায় এই বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুর হার অনেকটাই বেশি।

দিল্লীর আর এক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডক্টর পূজা খোসলা বলছেন, "শীতের শুরুতে মানে দীপাবলির পরে-পরে সাধারণত ডেঙ্গুর সংখ্যা কমে যেতে দেখা যায়। কিন্তু এই বছর তা বেড়েছে।" এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করছেন, কোভিড বিধিনিষেধ যেহেতু তুলে নেওয়া হয়েছে তাই মানুষজন সতর্কতা না মেনেই চলাফেরা করছে। বিভিন্ন জায়গায় আবার পানি জমতে শুরু করেছে, যাতে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু মশা।

তিনি আরও বলেছেন, এছাড়াও উত্তরপ্রদেশ বা প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে ডেঙ্গুর সংখ্যা বাড়ার জন্যও দিল্লিতে তার প্রভাব পড়ছে। আগস্টের মাঝামাঝি থেকেই উত্তরপ্রদেশে ডেঙ্গুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ডেঙ্গু ও অন্যান্য ভাইরাল জ্বরে অসংখ্য মানুষ মারাও গেছেন।

ডক্টর খোসলা আরও জানিয়েছেন, গঙ্গারাম হাসপাতালে প্রতিদিন ৪০ থেকে ১০০ জনের ডেঙ্গু রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, যাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ রোগী গুরুতর ও ১০ শতাংশ রোগীকে আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। আক্রান্তদের রক্তক্ষরণের সমস্যা থাকছে, প্লেটলেটও অত্যন্ত কম থাকছে। এখনও মানুষজন সতর্ক না হলে এই শীতের শুরুতে ডেঙ্গুর রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

তাঁর মতে, গত দু'বছরে কোভিড পরিস্থিতি ডাক্তারদের মানসিক ভাবে কঠিন হতে শিখিয়েছে, তাই এই বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্যও তাঁরা প্রস্তুত।

XS
SM
MD
LG