৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জুনিয়র কমিশনড অফিসার পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি যে ভারতেরই নাগরিক, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নন, প্রমাণ করতে বলা হল এক প্রাক্তন সেনাকর্মীকে!গুয়াহাটির বাসিন্দা মহম্মদ আজমল হক নামে ওই অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসারকে গত আগস্টে এ ব্যাপারে নোটিস পাঠিয়েছে অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। তাঁকে ভারতের নাগরিকত্বের নথিপত্র পেশ করতে বলার পাশাপাশি ১৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
অসমের বেআইনি অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনাল তাঁর নাম সন্দেহভাজন ভোটার তালিকায় তুলেছে। তিনি ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ ভারতে ঢুকেছিলেন বলে অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের।
হকের স্ত্রী মুমতাজ বেগমকেও ২০১২ সালে বিদেশী ট্রাইব্যুনাল একই অভিযোগে ডেকে পাঠিয়েছিল।গোটা ঘটনায় বিব্রত হক আত্মপক্ষ সমর্থনে দাবি করেছেন, তিনি মে মাসে একটি ব্যাঙ্কের কাস্টমার পয়েন্টের ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য আবেদন করেছিলেন, তখনই তাঁর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখা হয়।হক জানিয়েছেন, তাঁরা অসমের আদি বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম ১৯৬৬-র ভোটার তালিকায় ছিল। তাঁর মায়ের নামও ১৯৫১-র নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ন্যাশনাল রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত ছিল।তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তাঁর বুকে কান্না দলা পাকিয়ে উঠছে বলে জানিয়ে হক বলেছেন, ৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর ২০১২-য় নোটিস পেলাম। আমায় সন্দেহভাজন বিদেশি বলা হল। সব নথিপত্র জমা দিলাম। সেগুলি খতিয়ে দেখে আমায় ভারতীয় নাগরিক ঘোষণা করল ট্রাইব্যুনাল কোর্ট। তবে কেন বারবার এভাবে হেনস্থার শিকার হব? প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আবেদন করছি, একজন বৈধ নাগরিকের অসম্মান বন্ধ করুন!
হকের নাগরিকত্ব ঘিরে বিতর্ক সংক্রান্ত একটি ট্যুইট ভাইরাল হওয়ার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ড জানিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারকে সহায়তা দেওয়া হবে।