সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে খবর সংগ্রহ করার জন্য ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন দুই মহিলা সাংবাদিক। রোববার ত্রিপুরা পুলিশ আসাম থেকে তাদের আটক করে। অভিযোগ, তারা ত্রিপুরায় ‘মসজিদে ভাঙচুর’ নিয়ে বানোয়াট খবর ছড়াচ্ছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।
দুই সাংবাদিকের নাম সমৃদ্ধি সকুনিয়া এবং স্বর্ণ ঝা। তারা এইচ ডব্লু নিউজ নেটওয়ার্ক নামে এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত। সমৃদ্ধি রোববার টুইট করে জানান, তাদের আটক করে আসামের করিমগঞ্জে নিলামবাজার থানায় রাখা হয়েছে। গোমতী জেলার পুলিশ সুপার নিজে তাদের আটক করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ত্রিপুরা পুলিশ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, সমৃদ্ধি এক ব্যক্তির বাড়ির প্রার্থনাকক্ষের ছবি টুইট করেছিলেন। প্রার্থনাকক্ষটি অর্ধদগ্ধ অবস্থায় ছিল। সমৃদ্ধি দাবি করেন, ওই প্রার্থনাকক্ষে ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো হয়েছে। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, সেখানে কোনও ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো হয়নি। দুই সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগরতলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, দুই সাংবাদিক ত্রিপুরা ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
দুই সাংবাদিক বলেন, তারা যখন বিমান বন্দরে যাচ্ছিলেন, পথে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। থানায় তাদের সাড়ে তিন ঘণ্টা আটক করে রাখা হয়। তারপরে ত্রিপুরা পুলিশের একটি এসকর্ট টিম আসে। দুই সাংবাদিক পুলিশকে বলেন, তারা এখন কোথাও যাবেন না। তাদের আইনজীবী আসছেন শীঘ্রই। সেই শুনে পুলিশকর্মীরা চিৎকার করে বলেন, “এখন কেউ আসবে না”।
সোমবার সকালে দুই সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। একটি সূত্রে জানা যায়, পুলিশ দুই সাংবাদিককে নোটিশ দিয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, আগামী ২১ নভেম্বর আবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দু’জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এইচ ডব্লু নিউজ নেটওয়ার্ক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, পুলিশ আপাতত দু’জনকে হোটেল ছেড়ে আসতে দিয়েছে। বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাদের সময় দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহ। তা সত্ত্বেও বলা যায়, দুই মহিলা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। ত্রিপুরা পুলিশ সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চায়।
এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া টুইট করে বলে, যেভাবে দুই সাংবাদিককে আটকে রাখা হয়েছিল, তা নিন্দনীয়।
গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি টুইটে বলা হয়, ত্রিপুরায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলের সময় একটি ধর্মস্থানে ভাঙচুর করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ওই খবর অস্বীকার করে। কাকারবানের দরগাবাজারে যে ধর্মস্থানটি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ, বাস্তবে সেটি অক্ষত রয়েছে।