অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিশ্বময় শিক্ষার আলো ছড়াতে ‘রুম টু রিড’এর অবদান


please wait
Embed

No media source currently available

0:00 0:03:34 0:00
সরাসরি লিংক

বিশ্বময় প্রায় ৮০ কোটি মানুষ নিরক্ষর আর এদের বেশির ভাগ উন্নয়ণকামী দেশে যার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছেই মহিলা এবং কম বয়সী মেয়ে। মাই্ক্রোস্ফট কোম্পানির সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বের সব চাইতে দরিদ্র এলাকায় সাড়ে ষোল’শ স্কুল এবং ১৫ হাজার পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

জন উড বললেন, “আমি যখন মাইক্রোস্ফট কোম্পানিতে কাজ করতাম তখন একটি জিনিষ শিখেছিলাম সেটা হচ্ছে লক্ষ্য থাকতে হবে বিশাল আর সেটাই কিন্তু সাহসী মানুষদের আকর্ষণ করে।” ‘রুম টু রিড’ কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা জন উড বলেন, এই কোম্পানি শুরু করার সময়ই আমি বলেছিলাম রুম টু রিডের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের সবচাইতে দরিদ্র এলাকার ১ কোটি ছেলে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা।

জন উড, ১৯৯৮ সালে তিন সপ্তাহের ছুটিতে নেপালে গিয়ে ছিলেন সে সময় তিনি প্রত্যন্ত এক পাহাড়ী অঞ্চলের একটি স্কুলে গিয়ে ছিলেন। আর সেই অভিজ্ঞতাই তার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়ে ছিল।

জন উড বললেন, “স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল সাড়ে চারশ। তিনি বলেন, তার ঐ স্কুলের লাইব্রেরীটি ছিল একদম খালি।”

উড সংগে সংগেই ঐ দূর্গম পাহাড়ী এলাকার স্কুল লাইব্রেরীর বইএর খালি তাকগুলো ভরে দেওয়ার অঙ্গীকার করলেন। এক বছর পর ইয়াকের পিঠে তিন হাজার বই ভর্তি ব্যাগ চাপিয়ে ফিরে গেলেন সেই গ্রামে,। সেটাই ছিল “রুম টু রিডের” যাত্রা শুরু ।

বিশ্ব বিখ্যাত সংস্থা Microsoft-এর কাজ ছেড়ে দিয়ে সামান্য জমানো অর্থে শুরু করলেন ‘রুম টু রিড’ নামের অলাভ জনক প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের পরিবর্তন যে একমাত্র শিশু শিক্ষাই আনতে পারে সেই বিশ্বাস থেকেই প্রতিষ্ঠা করলেন এই কোম্পানিটি। বর্তমানে এশিয়া এবং আফ্রিকার ১০টি দেশে এদের কার্যক্রম রয়েছে।
ইরিন গাঞ্জু, ‘রুম টু রিড’ এর সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। তিনি বললেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বময় সাক্ষরতা দান করা আর সেই সংগে মেয়ের স্বাবলম্বি করে তোলাও অত্যন্ত জরুরী। সেকারনে মেয়েদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী স্কুল চালু রাখতে হবে।”

তিনি বললেন, “আমরা যা অর্জন করেছি তা ভাবতেও অবাক লাগে । আমরা বিশ্বে উল্লেখযোগ্য একটি সংস্থা গড়েছি যা উন্নয়ণকামী দেশগুলোতে যে শিক্ষা সমস্যা আছে তার সমাধান এনে দেবে।”

তিনি বললেন, আমাদের প্রাধান লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বময় স্বাক্ষরতার আলো ছড়িয়ে দেওয়া, লিংগ বৈষম্য ঘুচিয়ে আনা--- সেই সঙ্গে মেয়েরা নিজেদের যাতে সক্ষম করে তুলতে পারে সে ব্যপারে সাহায্য করা। আর সে কারনেই মেয়েদের দীর্ঘ মেয়াদী শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য ‘রুম টু রিড’ তহবিল দান করে থাকে।

উড বললেন, এই কর্মসূচী সফল হওয়ার প্রধান চাবিকাঠি হচ্ছে, আমরা স্থানীয় লোকজনকে অন্তর্ভূক্ত করেছি। আমরা সাহায্য করি বই দিয়ে এবং অর্থ দিয়ে। আর স্থানীয়রা সাহায্য করে স্কুলের জন্য জায়গা দিয়ে ও স্কুল তৈরী করার সময় কায়িক পরিশ্রম করেও।

দেশের শিক্ষা মন্ত্রনালয় স্কুলের শিক্ষক এবং লাইব্রেরিয়ানদের বেতন দিতেও রাজী হয়েছে। ‘রুম টু রিড’ এর পক্ষ থেকে স্থানীয় ভাবেই ছাপাখানা স্থাপন করা হচ্ছে এবং আর সেখানেই সেই দেশের সংস্কৃতির সংগে মিল রেখে স্থানীয় শিল্পীদের আঁকা বাচ্চাদের জন্য রংগিন ছবির বই এবং অন্যান্য বই ছাপা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালের শেষের দিকে ‘রুম টু রিড’ ২০ টি ভাষায় এক হাজার মূল বই থেকে অন্য ভাষায় বই ছাপাবে।

বিরাট সাফল্যের সংগে সঙ্গে এদের চ্যালেঞ্চও বেড়েছে অনেক নানা দেশের নানা সমাজের ও নানা স্তরের মানুষ স্কুল খোলার আবেদন জানাছছে। তাদের লক্ষ্য ছিল ২০১৫ সালের মধ্যে ১কোটি ছেলে মেয়েকে শিক্ষার আওতায় আনা কিন্তু ৫ বছর আগেই তারা এই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে।
তাহিরা কিবরিয়া
XS
SM
MD
LG