পাটের জন্ম রহস্য এবং এর জিন ‘এর বিন্যাস উদ্ঘাটন করেছেন সম্প্রতি বাংলাদেশের যে তিন জন বিজ্ঞানী, তাঁদেরই একজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন যে জিনের এই বিন্যাস উদ্ঘাটনের কারণে এখন পাট উৎপাদনের প্রতিকূলতা দূর করা সম্ভব। ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগের সঙ্গে একান্ত এক সাক্ষাৎকারে ডঃ হাসিনা খান বলেন যে এই উদ্ভাবন, এক সময়কার সোনালী আঁশের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। তিনি পাটের জিন ও জিনোমের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন যে এর বিন্যাস বোঝা গেলে, সেই অনুযায়ী পাট উৎপাদন সম্ভব হবে এমনকি ভিন্ন মৌসুমে এবং ভিন্ন পরিবেশে পাট উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়টি জানা যাবে।
অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন যে পাট যে জমিতে উৎপন্ন হয় সেই জমির উর্বরতা হ্রাস পায় কিংবা সেই জমি ধান উৎপাদনের জন্যে অচল হয়ে পড়ে এ রকম ধারণা ভ্রান্ত। ডঃ খান বলেন যে বাস্তবে সেই সব জমির উর্বরতা বরঞ্চ অনেকটাই বৃদ্ধি পায় কারণ পাট গাছের খসে পড়া পাতা জমির উর্বতা বাড়ায় এবং পাটের শেকড় যেহেতু মাটির অনেক ভেতরে প্রবেশ করে সেহেতু মাটি নরম হয়ে সেখানে পানি প্রবেশ করতে পারে, উর্বরতাও বেড়ে যায়।
ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগকে তিনি আরো বলেন যে এখন যখন পরিবেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী একটা সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে, তখন পরিবেশ-বান্ধব পাটের নতুন মূল্যায়ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। পাটের এই জীবন রহস্য উদ্ঘাটনে যে সাফল্য অর্জন করেছে তাঁর টীম সে সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন যে তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন বাংলাদেশের যে সব ছাত্রছাত্রী, কোন রকম বিদেশী প্রশিক্ষণ ছাড়াই, তাদের প্রতিভা সম্পর্কে তিনি অত্যন্ত গর্বিত। সকলের মিলিত সহযোগিতা না পেলে এই রহস্য উদ্ঘাটন হয়ত সম্ভব হতো না।