আনিস: ফেইসবুকে একটা অ্যাকাউন্ট না খুললে আজকালকার দিনে মুখ রক্ষা করাই মুস্কিল, তা আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন। সে জন্যেই দেখি ষাট কিংবা সত্তরের কোঠা পেরিয়েছেন, এমন লোকজন ও আজকাল ফেইসবুকে আত্মপ্রকাশ করছেন অনায়াসেই।
সেহ্জীন: অথচ সেই ২০০৪ সালের এক বসন্তবেলায় Zukerberg যখন তাঁর বন্ধুদের নিয়ে এই ফেইসবুক চালু করেন, তখন গোড়াতে ওটাতো ছিল, ক্লাসের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম। তাদের বয়স ছিল কুড়ি বছরের মতো। কিন্তু ২০০৬ সাল নাগাদ এটা সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে, বয়সের সীমারেখা ছাড়িয়ে।
আনিস: ঠিক বলেছেন, এখন এই আমেরিকায় যে প্রায় সাড়ে তেরো কোটির মতো মানুষ ফেইসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের বয়সই ২৬ বছরের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও ফেইসবুকে প্রসার ঘটেছে মূলত মধ্যবয়সীদের মধ্যে, বিশেষত মধ্যবয়সী, নারীদের মধ্যে। আমার তো মনে হয়, এর একটা কারণ আছে ...
সেহ্জিন: কি কারণ বলে আপনার মনে হয়?
আনিস: আমার মনে হয়, এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা সামাজিক যোগাযোগের কারণেই ক্রমশ একটু বয়সী লোকেরা ঝুঁকছেন ফেইস বুকের দিকে।
সেহ্জিন: সেটা কেন?
আনিস: সেটা এ জন্যে যে আপনাদের মতো যারা তরুণ তরুণী, তাদের সামজিক যোগাযোগের অনেক মাধ্যম রয়েছে। কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, অনুষ্ঠানে, আয়োজনে, পার্টিতে, পার্বণে, এদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে, ফোনে হচ্ছে টেক্সট মেসেজিং, কিংবা ইমেইলে নির্দ্বিধায় চলছে চ্যাট কিন্তু যারা বয়ষ্ক, হয়ত তাদের বন্ধ-বান্ধবরা নানান দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন, তাদের সঙ্গে এই সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করার উপায় হিসেবে ফেইসবুকের মতো এমন সুবিধাজনক মাধ্যম নেই বললেই চলে।
সেহ্জিন: কথাটা একদম ঠিক বলেছেন বলে মনে হয়। কারণ প্রথম দিকে যারা ফেইসবুক সম্বন্ধে খানিকটা সংশয়ী ছিলেন, তাঁরাও এর অসুবিধার চেয়ে সুবিধার দিকটাই বড় করে দেখছেন এখন। পৃথিবীতে তো এখন ৫০ কোটির ও বেশি লোক এই ফেইসবুক ব্যবহার করছেন। গড়ে প্রত্যেকের প্রায় দেড়শ জন বন্ধু যুক্ত রয়েছেন এই ফেইসবুকে, যাদের হালচাল, ছবি, জীবন-যাপন, পছন্দ – অপছন্দ আশা নিরাশার চমৎকার সব চালচিত্র আমরা দেখি এই ফেইসবুকে।
আনিস: এই যেমন আমি নিজেও এই ফেইসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে আমার ছোট্ট বেলাকার বন্ধুদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছি, কখনও বা মত বিনিময়ও। যাদের সঙ্গে কখনও যোগাযোগ হবে বলে ভাবিনি, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে, কথায়, ছবিতে, ভিডিওতে, সেটা কি কম আনন্দের ব্যাপার।
সেহ্জীন: আর শুধুইতো ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। প্রতিষ্ঠানের নামে ও তো ফেইসবুক আছে। এই তো আমাদের ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগেরও একটা নিজস্ব ফেইসবুক আছে।
আনিস: আর সেখানে আমরা নিয়মিত তুলে ধরছি কেবল আমাদের অনুষ্ঠানের লিঙ্ক নয়, আমাদের সহকর্মিদের ছবি, তাদের কার্যক্রম, আর পাচ্ছি ভিওএ বাংলার ফেইসবুক ফ্যানদের মন্তব্যও।