পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি রক্ষনশীল শহরে উচ্ছৃঙ্খল জনতা হিন্দু মন্দিরে হামলা চালিয়ে মন্দিরটির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি করার একদিন পর, বৃহস্পতিবার সেখানে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক পাকিস্তানের একজন কৃটনীতিককে ডেকে পাঠিয়ে এই আক্রমণের নিন্দে জানিয়েছেন এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবি জানান।
বুধবারের এই হামলার ঘটনাটি ঘটে রহিম ইয়ার খান জেলার ভোং শহরে ।
সেখানে একটি আদালত আট বছর বয়সী এক হিন্দু বালকের জামিন মঞ্জুর করে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল যে সে এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে একটি মাদ্রাসার অবমাননা করেছে। ছেলেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে সে না কি ইচ্ছে করে মাদ্রাসার পাঠাগারের কার্পেটে যেখানে ধর্মীয় বই পত্র ছিল সেখানে মুত্র ত্যা্গ করেছে। উচ্ছৃঙ্খল লোকজনের অভিযোগ হলো যে সে ধর্ম অবমাননা করেছে যা না কি পাকিস্তানে মৃত্যদন্ডযোগ্য অপরাধ।
মন্দিরে আক্রমণকারী লোকজন সেখানকার মূর্তিগুলোর ক্ষতি সাধন করে, মন্দিরের মুল দরজাটি ভেঙ্গে ফেলে এবং কিছুক্ষণের জন্য নিকটবর্তী একটি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী টুইটারে এই আক্রমণের নিন্দে জানিয়ে লেখেন তিনি প্রাদেশিক পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন এমন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাদের অবহেলার কারণে আক্রমণটি ঘটে । খান প্রতিশ্রুতি দেন যে সরকার মন্দিরটি পুনঃস্থাপন করে দেবে।
পাঞ্জাবের পুলিশ কর্মকর্তা আসিফ রাজা বলেছেন যে পুলিশের কাছে ৫০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম রয়েছে এবং তিনি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন সৈন্যরা এখন মন্দিরটি পাহারা দিচ্ছে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে।
এদিকে নতুন দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন,
“এ রকম ঘটনা আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্র ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলো চুপ করে থেকেছে এবং এই ধরণের আক্রমণ রোধ করতে সম্পুর্ণ ব্যর্থ হয়েছে”।
মুসলমান ও হিন্দুরা পাকিস্তানে প্রধানত শান্তিতেই বসবাস করেছে তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানের অধিকাংশ সংখ্যালঘু হিন্দুরা ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময়ে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যায়।