অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কায়রো ভাষণের এক বছর পুর্তিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়া


এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট ওবামা কায়রোয় এক ভাষণ দেন। উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের মুসলমানদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা।

কায়রোয় মিস্টার ওবামা যে ভাষণ দেন তাতে মুসলিম বিশ্ব ও আমেরিকার মধ্যে – বহু ক্ষেত্রে – ধর্মীয়, সামাজিক, সরকারী ও অর্থনৈতিক দিক থেকে ব্যবধান মিটিয়ে দেওয়ার একটা আশা ছিল।

প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন ‘যতদিন আমাদের মধ্যে যে মতপার্থক্য রয়েছে সেটা দিয়েই আমাদের সম্পর্কের বিশ্লেষণ করা হবে, আমরা তাদেরকে ক্ষমতায়ন করবো যারা শান্তির পরিবর্তে ঘৃনার বীজ বোনে এবং যারা সহযোগীতার পরিবর্তে সংঘাতকে তুলে ধরে। সহযোগীতাই আমাদের সকল জনগনকে ন্যায় বিচার ও উন্নতি সাধনে সাহাজ্য করবে।’

অনেকে মনে করেন মিস্টার ওবামার ভাষণে তিনি যে সার্বিক অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটাই ছিল ভাষণের মৌলিক ত্রুটি। মিশরীয় পত্রিকা গনতন্ত্র’র সম্পাদক হালা মুস্তাফা গত জুন মাসে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

হালা মুস্তাফা বলেন ‘আমি মনে করি যারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন তারা যে যা শুনতে চেয়েছেন তারা তাই শুনেছেন। আপনি যদি গনতন্ত্রের প্রবক্তা হন আপনি সেটাই শুনেছেন। আপনি যদি সরকারের পক্ষে হন তাহলে আপনি যাতে সন্তুষ্ট হবেন আপনি সেটাই শুনেছেন। আমি মনে করি শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য ফিলিস্তিনীরা ও ইস্রাইলীরা তারা যা শুনতে চেয়েছে তাই শুনেছে। কিন্তু সব শেষে এক বছর পর আমি মনে করি খুব কম অর্জিত হয়েছে, বলতে গেলে কিছুই না।’

কায়রোতে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইদ সাদেক একই মত পোষন করেন। তিনি বলেন অংশত উচ্চাশার একটা সমস্যা ছিল।

অধ্যাপক সাদেক বলেন ‘আমাদের দীর্ঘ দিনের একতণ্ত্রের ইতিহাস এবং অব্যাহত সব সমস্যা যার সমাধান কেউ করতে পারে না। তাই সবসময়ই আমাদের একটা আশা আছে, আকাঙ্খা আছে যে একজন মহাপুরূষ এসে আমাদের সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন, যিনি একটি রুপোর পাত্রে গনতন্ত্র উপহার দেবেন। তিনি যখন এখানে এসে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেন লোকজন চিত্কার করছিল ওবামা আমরা তোমায় ভালবাসি -- ওবামা আমরা তোমায় ভালবাসি। আজ লোকজন হতাশ, সাধারন ভাবে নিরাশ।’

যুক্তরাষ্ট্র-মুসলিম সম্পর্কে ইস্রাইল একটা বড় সমস্যা। কায়রোতে মিস্টার ওবামা ফিলিস্তিনী ভূমীতে ইস্রাইলী বসতিস্থাপনার বিরোধীতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।কিন্তু নির্মান কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং তাতে বহু মানূশ হতাশ হয়েছেন।

কিন্তু ইন্দোনেশিয়ায় অনেকে মনে করে আগ্রগতি হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন জাকার্তার বাসিন্দা রোরি।

রোরি বলেন ‘গাজা ভুখন্ডের প্রতি সমর্থন এবং পি এল ও এবং ইস্রাইলের মধ্যে আলোচনা – আমি তাতে মনে করি কিছু পরিবর্তন ঘটেছে। ভাষণের একটা প্রভাব পড়েছে।’

মিসৌরী রাজ্যের কলাম্বিয়া শহরে থাকেন ডাক্তার রাশেদ নিযাম। তিনি ইসলামিক সোসাইটি অফ আমেরিকা, ইসনা’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং নর্থ আমেরিকা বাংলাদেশী ইসলামিক কম্যুনিটি-র সভাপতি। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রাশেদ নিযাম, আমেরিকায় ইন্টার-ফেইথ কর্মসূচীতে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। প্রেসিডেন্ট ওবামার এই উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলমানরা এখন খুব উত্সাহিত বোধ করছে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সমালোচকদের বক্তব্যের কথা চিন্তা করে লোকজনকে ধৈর্য্য ধরার কথা বলেন। তিনি বলেন কোন একটি ভাষণ বহু বছরের অবিশ্বাস আর অনাস্থাকে মুছে ফেলতে পারে না।

সংশ্লিষ্ট

XS
SM
MD
LG