অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মহিউদ্দিন বৃন্তচ্যুত; বৃক্ষ আওয়ামি লীগ অক্ষত: আবুল মোমেন


A tractor tows residents through flood waters to a safe place on the outskirts of Karachi, August 4, 2013. 
A tractor tows residents through flood waters to a safe place on the outskirts of Karachi, August 4, 2013. 

চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেছেন যে বিদায়ী মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনী পরাজয় তাঁর নিজের পরাজয়, একে দলের বিপর্যয় মনে করার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন মহিউদ্দিন এখন বৃন্তচ্যুত হয়েছেন, কিন্তু বৃক্ষ আওয়ামি লীগ অক্ষতই থাকছে। ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবুল মোমেন চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল, এর কারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন।

আবুল মোমেন বলেন যে গত সংসদ নির্বাচন থেকেই তরুণ প্রজন্মের ভোটদাতারা প্রথাগত রাজনীতির বিপরীতে পরিবর্তনের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। সুতরাং মহিউদ্দিন চৌধুরী যে প্রথাগত রাজনীতি করে এসেছেন, তার বিপক্ষে মঞ্জুর আলম যে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন তাকেই ভোটদাতারা স্বাগত জানিয়েছেন। এক নাগাড়ে তিন মেয়াদের জন্যে চট্টগ্রামের মেয়র থাকার কারণে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে একটি বেপরোয়া এক রোখা মনোভাবের সৃষ্টি হয়। তিনি এক অর্থে নিজেকে অপরিহার্য মনে করতেন এবং খোদ আওয়ামি লীগের অনেকের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে মহিউদ্দিনের মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও তার পরাজয়ের জন্যে দায়ি। এক প্রশ্নের জবাবে আবুল মোমেন বলেন যে চট্টগ্রামের নের্তৃস্থানীয় হিন্দুরাও তাঁর উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন কারণ তিনি নিজের খেয়াল খুশি অনুযায়ী হিন্দুদের জমি নিয়ে সেখানে নিজেই মন্দির এবং দোকানপাট নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এই বিষয়টি সেখানকার হিন্দুদের ভীষণ ভাবে বিচলিত করে। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা মহিউদ্দিনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন কিন্তু মহিউদ্দিন চৌধুরী নিজে হিন্দু নের্তৃত্বের সঙ্গে সেই ভাবে যোগাযোগ করেননি। সুতরাং মনে করা হয় যে মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্ভবত হিন্দুদের সার্বিক সমর্থন লাভে ব্যর্থ হন।

আবুল মোমেন বলেন মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে তেমন কোন অভিযোগ নেই এবং তিনি মূলত আওয়ামি ঘরানারই লোক। তাঁর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন রাজনৈতিক পরিবেশকে অনেকখানি গণতান্ত্রিক করেছে। তিনি বলেন যে মঞ্জুর আলমের পক্ষে জামায়াতে ইসলামের সমর্থন না থাকলে তিনি স্বাধীনতার পক্ষের লোকের আরো ভোট পেতেন এবং সে ক্ষেত্রে তিনি আরো বড় ব্যবধানে জয়ী হতেন। জামায়াত তাঁর প্রতি সমর্থন জানানোতে যুদ্ধাপরাধীর বিচার সহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অন্যান্য ইস্যুতে তাঁর অবস্থান কি হবে সেটা বলার সময় এখনও আসেনি বলে আবুল মোমেন জানান। তবে তিনি মনে করেন যে এই নির্বাচনে আওয়ামি লীগ সমর্থিত প্রার্থির এই পরাজয় চট্টগ্রামের আওয়ামি লীগকে ঘর গোছাবার একটা সুযোগ ও এনে দিয়েছে। আবুল মোমেন মনে করেন না যে চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির জন্যে কোন রকম প্রতিকুল প্রভাব রাখবে।

XS
SM
MD
LG