অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইরান বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক-মাইক পেন্স


ইরানে চলমান সংকটসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ন নানা বিষয় নিয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভয়েস অব আমেরিকার কন্ট্রিবিউটর ভ্যান সাসটেরেন। তার কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরে রিপোর্ট করছেন সেলিম হোসেন।

ইরানে চলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভ এবং তার সমর্থন করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইট বার্তার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মাইক পেন্স বলেন ইরান হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তারা শুধু তাদের নিজের দেশের জনগনের ওপরই নির্যাতন করছে তা নয়; সেখানে মানবাধিকার লংঘনের বিষয় অস্বীকার করছে। তারা ঐ অঞ্চলে সন্ত্রাসের বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে। তারা বিপদজনক হয়ে উঠছে। আর তারই ফলে ইরানের জনগন নিজেরাই ফুঁসে উঠেছে।

“পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে তারা তাদের দাবী নিজেরাই উত্থাপন করেছে। আমরিকা বিশ্বের সব মুক্তিকামী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়। এটা বলতে হচ্ছে যে ২০০৯ সালে ইরানে যখন সবুজ বিপ্লব হয় তখন একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নীরব ছিলেন”।

মাইক পেন্সের ওই মন্তব্যের পর ভয়েস অব আমেরিকার কন্ট্রিবিউটর ভ্যান সাসটেরেন বলেন তিনি কিছুদিন অপেক্ষা করেন এবং তারপর কথা বলেন। আর তার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মাইক পেন্স বলেন:

“২০০৯ সালে ইরানের ত্রুটিপূর্ন নির্বাচনের বিরুদ্ধে তরুন সম্প্রদায়ের সেই আন্দোলনে তারা একটি গনতান্ত্রিক মুক্ত ইরানের দাবী করেছিল। ওবামা প্রশাসন তখন নীরব ছিল। সেই সময় কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি থেকে আমরা একটি প্রস্তাব পাশ করেছিলাম ভোটাভুটির মাধ্যমে এবং তারপরই তখন প্রেসিডেন্ট ওবামা কথা বলেন। আর এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুক্তিকামী মানুষকে সমর্থন করেছেন এটা প্রশংসার যোগ্য। আমা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অপরাপর দেশ ইরানের সমৃদ্ধ ও মুক্ত ভবিষ্যতের পক্ষেই মত দেবেন”।

গত সপ্তাহে ইরানী সরকারেরর দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে সাধারন জনগনের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেন শেষ পর্যন্ত ইরানীরা দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে যে সোচ্চার হয়েছে, তাতে তাঁর সমর্থন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাইক পেন্সের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলৈন,:

“প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পরিস্কার ইতিবাচক সমর্থন ইরানে বিক্ষোভকারীদের মনোবল বাড়িয়েছে এবং আমি মনে করি বিশ্বে গনতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন হিসাবে আমেরিকার ভূমিকা এতে স্পষ্ট হয়েছে”।

বিক্ষোভকারী ও সরকারী নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২১ জন নিহত হয়েছে। ইরানী সরকার টুইটার টেলিগ্রাম ফেসবুক ইনস্টাগ্রামসহ সব সামাজিক মাধ্যমের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে প্রেসিডেন্ট্ ট্রাম্পের টুইট বার্তাসহ বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়া ইরানীদের কাছে কতোটা পৌঁছাচ্ছে তা নিয়ে শংসয় প্রকাশ করে ভ্যান সাসটেরেন মাইক পেন্সের কাছে জানতে চান আর কোনো উপায়ে ইরানীদের কাছে বার্তা পৌছানো সম্ভব?

মাইক পেন্স বলেন প্রেসিডেন্ট বা আমি নিজে অথবা পররাস্ট্রমন্ত্রী কিংবা জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হেলি; যেই হইনা কেনো, আমরা তাদেরকে বার্তা দিতেই থাকবো। যে করেই হোক সেই বার্তা তাদের কাছে পৌঁছাবে।

“আমরা চাই তারা মুক্ত স্বাধীন একটি সমৃদ্ধ জাতি হোক। আমরা চাই তারা এমন একটি দেশ পাক যার শাষক পারমানবিক অস্ত্র তৈরীর হুমকী দিয়ে বিশ্বকে ভীত করবে না।তিনি বলেন আমরা ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি ইরানের পারমানবিক চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র পূনরায় সত্যায়ন করবে না”।

আর তার ফলস্রতিতে ইরানে এর কি প্রভাব পড়েবে? এমন প্রশ্নে পেন্স বলেন

“আমরা বিশ্বাস করি নিষেধাজ্ঞা কাজ করে। ইরানের ওপর হয়তো কাজ করছে না। নিষেধাজ্ঞা কাজ করছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে। ইরানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তা যেনো পুরোপুরি কাজ করে সেই ব্যাবস্থা নেবে”।

মাইক পেন্স বলেন পারমানবিক চুক্তিটি অত্যন্ত দুর্বল শর্ত দিয়ে করা। মাত্র ১০ বছরের সময়সীমা বেধে দেয়া এতে। ফলে ১০ বছর পর ইরান পারমানবিক অস্ত্র তৈরী করবে। আমরা চাই দীর্ঘ সময়ের জন্য একটি কিছু করতে। তা এমনভাবে করা হবে তা যদি অমান্য করে তবে সকল ধরনের নিষেধাজ্ঞা ইরানের ওপর চাপানো হবে এই ভয় যেনো তারা পায়।

ইরান এবং উত্তর কোরিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কতোটা শংকিত এমন প্রশ্নে মাইক পেন্স বলেন চীন আগের চেয়ে অনেক শক্তভাবে এখন আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। তবে চীনের আরো অংশগ্রহণ দরকার।

“উত্তর কোরিয়াকে অর্থনৈতিক এবং কুটনৈতিকভাবে একঘরে করার জন্য চীনের আরো বেশী সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি তা সম্ভব হবে। সকল পথ আলোচনার জন্যে উন্মুক্ত রয়েছে। প্রেসিডেন্ট এটি স্পষ্ট করেছেন যে যুক্তরাস্ট্রের জনগনের সুরক্ষা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তিনি পরিস্কার করে বলেছেন উত্তর কোরিয়অ বুঝতে পারছেনা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার কথা। তাদেরকে যে কোনো মূল্যেই হোক পারমানবিক কর্মসূচী ও ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। তা করলে এই সংকটের শান্তিপূর্ন সমাধানের পথ রয়েছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:07:56 0:00

XS
SM
MD
LG