বাংলাদেশে নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা কমানোর দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার ঢাকার শাহবাগসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চাকরি প্রত্যাশীরা বিক্ষোভ করেছেন। আগামী ৪ঠা মার্চ তারা আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। তাদের দাবি, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খানের এক গবেষণায় দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে প্রায় ২৫৮ ধরনের কোটা রয়েছে। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, পৃথিবীর কোথাও চিরস্থায়ীভাবে কোটা পদ্ধতি নেই। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোটা ব্যবস্থা করা যেতে পারতো। কিন্তু বাংলাদেশে ৪৫ বছর ধরে তা চলে আসছে। যে কারণে মেধাবীরা চাকরি না পেয়ে বিদেশ চলে যাচ্ছে অথবা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, জেলা কোটা অবিলম্বে তুলে দেয়া উচিত।
বিদ্যমান ব্যবস্থা অনুযায়ী কোন পরীক্ষার মাধ্যমে পিএসসি যদি ১০০ জন লোক নিয়োগ দেয় তাহলে মাত্র ৪৪ জন নিয়োগ পাবেন মেধার ভিত্তিতে। বাকীদের মধ্যে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়, ১০ জন নারী কোটায়, ১০ জন জেলা কোটায়, ৫ জন উপজাতি কোটায় নিয়োগ পাবেন। এক শতাংশ নিয়োগ পাবেন প্রতিবন্ধী কোটায়। প্রতিবন্ধী না পাওয়া গেলে মেধার ভিত্তিতে ওই শূন্য পদ পূরণ করার বিধান রয়েছে। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার কারণে বিসিএস-এ অনেক সময়ই পদ খালি থাকছে। ৩৫তম বিসিএস-এ ৩৩৮টি পদ শূন্য ছিল। ৩১তম বিসিএস-এ শূন্য ছিল ৭৭৩টি পদ।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে বর্তমানে কোটা সংস্কারসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোটার বিরুদ্ধে নয়, এটা কোটা সংস্কারের আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা এর অন্তরায়। আমরা চাই কোটা সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া হোক।
ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরীর রিপোর্ট