অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রোহিঙ্গাদের হত্যার বিষয়ে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ম্যাথিউ ওয়েলসের মূল্যায়ন


নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক খবরাখবর সত্বেও, মায়ানমার সামরিকবাহিনী বরাবর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যার কথা অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি এক গনকবর আবিষ্কারের পর তারা রোহিঙ্গা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

শুনুন বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়ার ক্রাইসিস এ্যাডভাইজার ম্যাথিউ ওয়েলসের সাক্ষাতকার। তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন রোকেয়া হায়দার

Amnesty International রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে গনকবরের সন্ধান ও রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা করেছে। ওয়াশিংটনে এ্যামনেস্টির কর্মকর্তা ম্যাথিউ ওয়েলস বলেন –

‘এতদিন পর্য্যন্ত সামরিক বাহিনী এই তো মাত্র দুমাস আগেও সামরিক বাহিনী তাদের ভাষ্যে, এক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বস্তুতঃ কোন ধরণের হত্যাকাণ্ড বা অত্যাচারের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়। এতে বলা হয় সেনাবাহিনী কোনই অন্যায় করেনি। সারা বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা – সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে তাদের বর্বর অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশের পরেও তারা সবকিছুই অস্বীকার করে। তবে গতকাল তারা একটি ঘটনার কথা স্বীকার করেছে যে সেনাবাহিনী এক জায়গায় কয়েকজন রোহিঙ্গা পুরুষকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করে। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তবে আমি মনে করি যে, তারা এখনও এটাই বলছে যে একটি মাত্র ঘটনায় কয়েকজন সেনা এই ধরণের কাজ করেছে।’

এ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনালের সিনিয়ার ক্রাইসিস এ্যাডভাইজার বলেন,

‘আমরা জানি এ হচ্ছে জাতিগত নিধনের বিরাট অভিযানের একটি অংশ মাত্র। একের পর এক গ্রামে সেনারা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করেছে । রোহিঙ্গা মহিলা ও বালিকাদের ওপর যৌন অত্যাচার চালিয়েছে। এবং সুপরিকল্পতভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধূলিসাৎ করেছে।’

মায়ানমারের গনতান্ত্রিক সরকারের ভুমিকা সম্পর্কে এ্যামনেস্টি কি বলছে? এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ ওয়েলস বললেন,‘সামরিক বাহিনীই এই ঘটনার মুল হোতা। আমরা দেখেছি ৬ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশী রোহিঙ্গা পুরুষ নারী ও শিশুকে জোর করে বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই তা করা হয়েছে। বিশ্বের যে কোন স্থানের চাইতে এই শরণার্থী সংকট সবচাইতে বিরাট ও জটিল। সামরিক বাহিনী অব্যাহতভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং অনেকে যখন পালিয়ে যাচ্ছিল পিছন থেকে তাদের ওপর গুলী করা হয়।’

বেসামরিক সরকারও কি পরিস্থিতি অস্বীকার করছেন ? তিনি কি মনে করেন? ম্যাথিউ ওয়েলসের বক্তব্য - ‘এ পর্য্যন্ত তারাও সব অস্বীকার করেই আসছেন। এর ফলে উত্তরের রাখাইন রাজ্যে এখনও যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে তাদের জন্যও পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে উঠছে। সরকার মানবাধিকার সংস্থার কর্মী এবং সাংবাদিকদের সেখানে যেতে দিচ্ছেন না।’

এ্যামনেস্টি কর্মকর্তা আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কক্সবাজারে যাচ্ছেন সেখান থেকে তিনি আমাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও জানাতে পারবেন বলে আশাকরি।

XS
SM
MD
LG