বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা যখন এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে ঠিক তখনই শরণার্থী প্রত্যাবাসনে চীন নতুন এক বার্তা নিয়ে এলো। চীন এই মানবিক সহায়তা বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিল না। কিন্তু অনেকটা নাটকীয়ভাবে একই সময়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. ওয়েং ই ফোন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনকে। বলেন, মিয়ানমার তাদেরকে জানিয়েছে, প্রত্যাবাসন শুরু করার ব্যাপারে তারা আগ্রহী। তবে নভেম্বরে তাদের সাধারণ নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচনের পর তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আলোচনা শুরু করবে। ৮ই নভেম্বর সে দেশে নির্বাচন হওয়ার কথা। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রত্যাবাসন শুরুর আগেই বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকেই প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে তা স্থির হবে। বৈঠকটি কোথায় হবে তা অবশ্য বলা হয়নি। নানা সুত্রে জানা গেছে, আলোচিত এই বৈঠকটি ডিসেম্বরে বেইজিংয়ে হতে পারে। ঢাকার তরফে বেইজিংকে বলা হয়েছে, এই বৈঠকে অং সান সু চির উপস্থিতি যেন নিশ্চিত করা হয়। উল্লেখ করা যায় যে, এর আগে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে প্রত্যাবাসনের দুটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। পরিবেশ তৈরি হয়নি, এটা বলে রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে রাজি হয়নি। প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা তিন বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
ওদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভার্চুয়াল সম্মেলনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন, মান উন্নয়নে জরুরি মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ ৩৮টি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। সম্মেলন শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ব্যাপক চেষ্টা শর্তেও গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। শুক্রবার ঢাকার পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, চীনের টিকা বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া করোনা পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দুটি দেশ এক সঙ্গে কাজ করবে। করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় তিনি বলেন, চীনের সাহায্য অব্যাহত থাকবে। করোনার কারণে যেসব প্রকল্প স্থগিত বা ধীর গতিতে রয়েছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন।