অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রবিবার সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত রোজিনা ইসলাম কারাগারে বন্দী


বাংলাদেশে এই মুহূর্তে জোর প্রতিবাদ চলছে। প্রত্যেক পেশার মানুষ তাদের মত প্রকাশ করছেন বিভিন্ন ভাবে।আর এটি করছেন একজন নারীর পক্ষে। নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত লাঞ্ছিত হয়ে আসছেন। তবে এবারের ঘটনাটিকে সবকিছুর উর্ধে বলে বিবেচনা জনগণের। সাংবাদিকতা পেশাকে বেছে নেবার মূল কারণ সঠিক তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে জনগণের সেবা করা। এবং যারা এই পেশাকে বেছে নেন তারা তাদের নীতির সঙ্গে আপোষ করেন না। আর আপোষ করেন না বলেই অনেক সময় তাদের চড়া মূল্য দিতে হয়। যেমন দিচ্ছেন প্রথম আলোর নারী অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম।অনুসন্ধান মূলক প্রতিবেদক হিসেবে রয়েছে তাঁর খ্যাতি। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও রয়েছে। একজন পেশাদারী সাংবাদিক তাঁর পেশাদারী কর্তব্য পালনের সময় অনেক অনভিপ্রেত পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকেন। তবে রোজিনা ইসলামের ঘটনা নাড়া দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে, বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেলের খবরের শিরোনাম হয়েছেন রোজিনা ইসলাম। তাঁর অপরাধ তিনি বাংলাদেশের জনগণের সেবা করছিলেন তাঁর কাজের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অনিয়ম নিয়ে করে যাচ্ছিলেন সিরিজ প্রতিবেদন। সহকর্মীরা বলছেন সে কারণেই হয়তো ক্রুদ্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ কতিপয় ব্যক্তিদের।

কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে ভিন্ন। বলা হচ্ছে তিনি ‘নথি চুরি করেছেন, মোবাইলে ছবি তুলেছেন’। অনেকের প্রশ্ন, এমন গুরুত্বপূর্ণ নথি যা কোনক্রমেই প্রকাশ করা যাবেনা, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এমন নথি টেবিলে কেন পড়ে থাকবে? সচিবালয়ের খবর সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সাংবাদিকদের তথ্যমতে 'ক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট' রাখা হয় লকারে।

একটু পেছনে যাই, কি হয়েছিল সেদিন।

সোমবার সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান।সেখানে বিকেল তিনটার দিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রোজিনা ইসলাম
please wait
Embed

No media source currently available

0:00 0:01:14 0:00

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, রোজিনা ইসলাম সচিবের পিএসের কক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলেন। কিছু কাগজপত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী থানায় অভিযোগ করেছেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু রিপোর্ট করছিলেন। যার মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির রিপোর্ট ছিল।সহকর্মীদের ধারণা, এই ঘটনা হয়তো মন্ত্রণালয়ের আক্রোশের কারণে ঘটে থাকতে পারে।

রোজিনা ইসলাম একজন সাহসী সাংবাদিক- ফরিদা ইয়াসমিন
please wait

No media source currently available

0:00 0:01:46 0:00

রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা অফিশিয়াল সিক্রেটস আইনটি সাংবাদিকদের জন্য প্রযোজ্য কিনা। তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

সাহসী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সহকর্মীরা রোজিনা ইসলামের নাম নিচ্ছেন খুব গর্বের সঙ্গে। বলছেন, যেখানে অনেক সাংবাদিক নানা আইনের কারণে ভীত, জর্জরিত, সেখানে রোজিনা ইসলাম সাহসের সঙ্গে একের পর এক সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ করেছেন।

রোজিনা ইসলামের জামিনের আদেশ আগামী রোববার দেওয়া হবে
please wait

No media source currently available

0:00 0:02:29 0:00


আজ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাঁর গ্রেফতারের খবর প্রচার করা হচ্ছে। তিনি প্রথম সাংবাদিক যার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা হয়েছে। কিন্তু যারা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার তাঁর জামিনের শুনানি হবার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে নেয়া হয় বৃহস্পতিবার। কিন্তু বৃহস্পতিবার শুনানি হলেও জামিনের সিদ্ধান্ত রবিবার দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

রবিবার সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত রোজিনা ইসলাম কারাগারে বন্দী।

XS
SM
MD
LG