অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রাশিয়ার ওপর কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ


রাশিয়ার ওপর কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ
রাশিয়ার ওপর কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ
ইউক্রেনের সর্বশেষ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কি ভূমিকা নেয়া উচিৎ সে বিষয়ে এক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের হেরিটেজ ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে। এতে অংশ নেন বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশ্লেষক।
please wait

No media source currently available

0:00 0:04:50 0:00
সরাসরি লিংক

ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বসাম্প্রতিক অভিযানকে দেশটির সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়ন রাষ্ট্রসমূহকে রাশিয়ার ওপর কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউক্রেন নিয়ে অনুষ্ঠিত ওই প্যানেল আলোচনায় বক্তারা। রাশিয়ার এ ধরনের আচরণকে গোটা বিশ্বের জন্য নিরাপত্তা হুমকী বলেও তারা মন্তব্য করেন।

‘ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনার সঞ্চালন করেন হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের দা ক্যাথরিন এ্যান্ড শেলবী কিউলম ডেভিস ইনস্টিটিউট ফর ফরেন স্টাডিজের পরিচালক ড. জেমস ক্যারাফানো। আলোচনায় অংশ নেন ফরেন পলিসি ইনিশিয়েটিভ এর নির্বাহী পরিচালক ড. ক্রিস্টোফার জে গ্রিফিন, ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. মাইকেল ই ও-হ্যানলন এবং হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ফেলো ড. কিম আর হোমস।

বক্তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ঐ অঞ্চলে বিভিন্ন স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহের উদ্ভবের ইতিহাস তুলে ধরেন।

ইউক্রেনের স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ ও দেশটিতে গণতন্ত্র ও ব্যাবসা বানিজ্যের প্রসারে যুক্তরাস্ট্রের সমর্থন ও সহযোগিতার ইতিহাস তুলে ধরে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. মাইকেল ই ও-হ্যানলন বলেন ইউক্রেনে বিগত কয়েক মাসের অস্থির অবস্থা, প্রাণহানি, সেখানে রাশিয়ার সর্বশেষ অভিযান সবকিছু মিলে এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে অবিলম্বে যুক্তরাস্ট্রের উচিৎ হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে রাশিয়ার ওপর দীর্ঘমেয়াদী ও শক্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ। অন্যথায় অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।

মিষ্টার হ্যানলন বলেন, “তিনি বলছিলেন, তুলনামূলকভাবে এখনো মৃতের সংখ্যা কম বলতে হবে। কিন্তু আমি শংকিত; এর চেয়ে যদি পরিস্থিতি খারাপ হয়, তাই নিয়ে। অবস্থা যেনো আর খারাপ না হয় সেজন্য অবিলম্বে ব্যাবস্থা নেয়া হোক। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যতো কঠিন সম্ভব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুন। এমন শক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক যা পুতিনকে পরিস্কারভাবে বুঝিয়ে দেয় যে গোটা বিশ্বই তার বিরুদ্ধে। আমার বক্তব্য হচ্ছে যদি সে ইউক্রেনের ক্ষমতা দখল করতে চায় বা জোর করে ইয়ানুকভিচকে ক্ষমতায় বসাতে চায় অথবা যদি ইউক্রেনের জনগনকে শাস্তি দেয়; তবে কয়েকমাসের জন্য নয়, দীর্ঘমেয়াদের জন্য আরোপ করতে হবে এই নিষেধাজ্ঞা। এ পর্যন্ত সেখানে যা ঘচেছে তাযে ঠিক হয়েছে তা বলছি না। কিন্তু অবস্থা যেনো আর খারাপ না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে”।

যুক্তরাস্ট্র ইউক্রেনে সর্ববৃহৎ বিনিয়োগারী বলে নয়, এখনই যুক্তরাস্ট্রের উদ্যোগে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও বন্ধুরাষ্ট্রসমূহকে সাথে নিয়ে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অযাচিত হস্তক্ষেপ ও দখলদারি মনোভাব শক্ত হাতে দমন না করলে, রাশিয়ার ন্যায় অন্যান্য উচ্চাভিলাষী রাষ্ট্রসমূহ এ থেকে উৎসাহ পাবে যা ভবিষ্যৎ বিশ্ব শান্তির জন্য অন্তরায় হয়ে দাড়াবে বলে অভিমত ব্যাক্ত করলেন অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আলোচক ড. ক্রিস্টোফার জে গ্রিফিন।

গ্রিফিন বলেন, “ইউক্রেনের সংকটময় পরস্থিতিতে যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্টের উচিৎ হবে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। প্রেসিডেন্টকে এও মনে রাখতে হবে যে বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে যুক্তরাস্ট্রের উদ্যোগ দেখার জন্য, যুক্তরাস্ট্রকে বোঝাতে হবে যে তারা দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে আর সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে দখলদার হচ্ছে পরিস্কারভাবে রাশিয়া—ব্যাক্তিগতভাবে পুতিন আর তার সমর্থকরা। বৃহৎ পরিসরে চীন সিরিয়া ইরান তাকিয়ে আছে ইউক্রেন পরস্থিতিতে আমেরিকা কি ভুমিকা নেয় তা দেখার জন্য; যেনো আমেরিকা যদি এর বিপক্ষে কড়া অবস্থান না নেয়, ভবিষ্যতে তারাও এমন দখলদারিত্বের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে”।

হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ফেলো ড. কিম আর হোমস বলেন ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ওবামা প্রশাসনের উদ্বেগ এবং ইউক্রেন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামার রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কড়া ভাষায় কথোপকথন সন্তোষজনক। তিনি বলেন অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেন বিষয়ে তার অবস্থান ষ্পষ্ট করতে হবে এবং রাশিয়াকে বোঝাতে হবে যে ইউক্রেনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোন রকম দুর্বলতা নেই।

কিম বলেন, “প্রতিরক্ষা খাতে ব্যায় কমানোর কৌশল যুক্তরাস্ট্রের বন্ধ করতে হবে। এতে রাশিয়া, চীন ও অন্যান্য দেশকে সতর্ক করা সহজ হবে যে আমেরিকার সামরিক শক্তি ঠিক আছে। এ পরিস্থিতিতে সেনা অভিযানের চিন্তা করা ঠিক হবে না, ইরাক আফগানিস্তান ও সিরিয়া’র বিষয় মাথায় রেখেই তা করতে হবে। ইউক্রেন পরিস্থিতির কিভাবে শান্তিপূর্ন সমাধান করা সম্ভব তা নিয়ে অবিলম্বে চিন্তা করা উচিৎ”।

আলোচনা শেষে উপস্থিত স্রোতারা ইউক্রেন পরিস্থিতি ও চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলোর অবস্থান নিয়ে প্যানেলিষ্টদের কাছে প্রশ্ন করেন।
XS
SM
MD
LG