অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ জুড়ে বিভিন্ন দেশগুলিতে মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা


পিউ গবেষণা সংস্থার এক নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, পশ্চিমা দেশগুলির সরকার করোনভাইরাস মহামারীকে কতটা ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, সে সম্পর্কে জনগণের ভিন্ন মতামত রয়েছে। এছাড়া বাধ্যতামূলক টিকাদানের প্রতি মানুষের মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদদাতা হেনরি রিজওয়েল লন্ডন থেকে তার এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছেন যে, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে, জীবনের খুব কম ক্ষেত্রই পাওয়া যাবে, যেখানে মহামারীর কোন প্রভাব পরেনি। এই দুই দেশে এত বিশাল সংখ্যায় মানুষ মারা গেছেন যা ছিল অপ্রতিরোধ্য। লকডাউনের কারণে অর্থনীতিও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং সামাজিক কার্যকলাপ সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

পিউ গবেষণা সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত সমীক্ষার সহ-লেখক ক্যাট ডেভলিন বলেন, "উদাহরণস্বরূপ, জার্মানিতে, ৭৭ শতাংশ জনগণ মনে করে যে তাদের দেশ এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভাল কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সমীক্ষা তিনটি দেশ - যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সে করা হয়েছিল এবং মতামতগুলিও ছিল কিছুটা বিভক্ত। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৮ শতাংশ বিশ্বাস করে যে, তাদের দেশ ভালভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নি।" যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব নেওয়ার আগে, ২০২০ সালের নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে এই গবেষণাটি করা হয়েছিল, এবং ঠিক সেই সময়েই যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার টিকা নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম তুলনাযমূলক ভাবে অনেক ধীর গতিতে সম্পন্ন করছে। প্যারিসের এই ক্লিনিকে, তাই হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্যারিসের ১৭ তম জেলার মেয়র জেফ্রয়ে বাউলার্ড বলেন, “আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা এই রোগের আক্রমণ প্রতিরোধে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মানুষদেরদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত, কিন্তু আমাদের কাছে ভ্যাকসিন নেই। এখানে, আমরা একটি সম্পূর্ণ সজ্জিত কেন্দ্রে আছি তবে এটি এখন শূন্য এবং আমরা স্বভাবতই যথেষ্ট ক্ষুব্ধ।"

ফ্রান্স এবং অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রগুলি যুক্তি দিয়েছে যে, জনগণের আস্থা কমে যাওয়ার আশঙ্কায তারা ভ্যাকসিন অনুমোদনের প্রক্রিয়াটি তাড়াহুড়া করে করতে চায় না এবং সেটা উচিতও নয়। ফ্রান্সে ভ্যাকসিনের প্রতি সন্দেহের মাত্রা এক উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, সেদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ এই টিকা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাক্রন সম্প্রতি বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনগুলি নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

পিউ সমীক্ষা বাধ্যতামূলক টিকা দেওয়ার বিষয়ে মনোভাব নিয়ে উত্তরদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এ বিষয়ে পিউ গবেষণা সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত সমীক্ষার সহ-লেখক ক্যাট ডেভলিন বলেন, “আমরা যে একই প্রশ্ন তিনটি দেশকে করেছি, সেখানে বেশিরভাগ লোকেরা বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন নেওয়াকে গ্রহণেযোগ্য ধারণা বলে মনে করেননি। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, ফ্রান্সে ৭৫ শতাংশ মানুষ সরকার-প্রদত্ত টিকার ধারণা পছন্দ করে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রই এমন এক দেশ, যেখানে আমরা সরকার-বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনের ধারণার গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছি কেননা ৬২ শতাংশ এটি গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব বলে মনে করে”।

যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রামটি ত্বরন্বিত করা হচ্ছে, এখনও অবধি এক কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে। ইউরোপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশগুলির মধ্যে যুক্তরাজ্যে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ করোনভাইরাসে মারা গেছে।

মে মাসে যে নির্ধারিত স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকার মহামারীকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সে ব্যাপারে জনগণের অনুমোদন সম্পর্কে একটা ধারণাও পাওয়া যাবে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:20 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG