বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইর্য়ক সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টায় জাতিসংঘের ৭৩ তম সাধারন অধিবেশনে বক্তব্য রেখেছেন। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে, রোহিঙ্গা সংকটে শান্তিপূর্ণ সমাধানে মিয়ান্মারের উপর চাপ প্রয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “মিয়ানমার মৌখিকভাবে সব সময়ই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে তারা কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না।”
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়নমারের এই নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা সাধ্যমত তাদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, শিশুদের যত্নের ব্যবস্থা করেছি।”
এই কাজে জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, ওআইসিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সহিংস উগ্রবাদ, মানবপাচার ও মাদক প্রতিরোধে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করার নীতি যে বিশেষ সুফল দিয়েছে, সে কথাও জাতিসংঘ অধিবেশনে তিনি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা পেশাদারিত্ব, সাহস ও সাফল্যের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। বাংলাদেশ গত ত্রিশ বছরে ৫৪টি শান্তি মিশনে এক লাখ আটান্ন হাজার ৬১০ জন শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বিশেষ অবদান রেখেছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ১৪৫ জন শান্তিরক্ষী জীবন দিয়েছেন।
বাংলাদেশে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার, শিক্ষার হার, সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন সফলজনক কর্মসুচীর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কর্মসূচী সমূহের মধ্যে, কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি বাড়ি-একটি খামার, আশ্রয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচী, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রাক্কালে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে আলোকচিত্র সাংবাদিক শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়।
কমিটি টু প্রটেক্ট জর্নালিস্ট, সিপিজে, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ বেশ কিছু সংগঠন শহিদুল আলমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়। শহিদুল আলমের আত্বীয় স্বজনরাও বিক্ষোভ সমাবেশে ছিলেন।