জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তান গভীর মানবাধিকার সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের জনগণের অধিকার সমুন্নত রাখতে তালিবান শাসকদের ব্যর্থতা দেশটিতে আরও অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। । কাউন্সিলের বিশেষ অধিবেশনে হাইকমিশনারের উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
হতাশাব্যঞ্জক এই প্রতিবেদনটি এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি সমাজকে বর্ণনা করে, যেখানে আফগান অর্থনীতির প্রায় পতনের ফলে, লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম। এতে বলা হয়, দারিদ্র্য ও ক্ষুধার তাড়নায় মানুষ বেঁচে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ, এমনকি নিজেদের শিশুদের বিক্রি পর্যন্ত করে দিচ্ছে।
গত আগস্টে তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার আগে, জাতিসংঘ সর্বোচ্চ সংখ্যক বেসামরিক লোকজনের হতাহতের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যার প্রধান শিকার নারী ও শিশু। সেই তুলনায় হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কমলেও, এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় এখনো অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ডেপুটি হাইকমিশনার নাদা আল-নাশিফ কাউন্সিলকে বলেছেন, সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বাড়ছে। তিনি তালিবান কর্তৃপক্ষের এবং একটি উগ্রবাদী জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীর দলে শিশুদের ক্রমাগত নিয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷
আল নাশিফ বলেন, “যদিও তালিবানের দখলদারিত্ব দেশে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি অস্বস্তিকর অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু মানবাধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণকে তারা সামান্যই সুরক্ষা দিতে পারছে। বিশেষ করে নারী এবং মেয়েরা শিক্ষার অধিকার, জীবিকা নির্বাহ এবং সামাজিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বড় অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছে, যেখানে অতীতে তাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন ছিল”।
আল নাশিফ বলেন, তালিবান যদি এভাবে নারীদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করে, তাদের কাজ করতে নিষেধ করে এবং তাদের একজন পুরুষ আত্মীয়ের অধীনে অন্তরীণ করা অব্যাহত রাখে, তবে আফগান সমাজকে এর জন্য চওড়া মূল্য দিতে হবে।