যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কমিউনিটি ক্লাবে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সমাজ থেকে এই ‘বিদ্বেষমূলক ঝুঁকি’ নির্মূলে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে সোমবার পাঠানো এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন ধর্ম, বর্ণ,গোত্র নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদেরকে বিবেচনা করা উচিত সন্ত্রাসী হিসেবেই।
বিশ্বের শান্তিকামী সমাজ থেকে এসব বিদ্বেষমূলক আপদ নির্মূলে সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ। সে সঙ্গে মানব সভ্যতার জন্য হুমকি হিসেবে উদ্ভূত এই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের রয়েছে তা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই ঘটনার শিকার দুর্ভাগা পরিবারের সদস্যদের এবং আমেরিকার জনগণের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানো প্রতিটি মানুষের জন্যই বেদনা ও দুঃখে আমাদের হৃদয়ে রক্ত ঝরে।
ভারত:
এত সহজে খামখেয়ালি এক বন্দুকবাজের হাতে খুন হয়ে যেতে পারেন ৫০ জন মানুষ? আমেরিকার অরল্যান্ডোর এই ঘটনায় স্তম্ভিত বাকি বিশ্বের মত কলকাতার মানুষও। একই সঙ্গে মানুষের মনে প্রশ্ন, আমেরিকায় এ ধরণের ঘটনা বারংবার ঘটা সত্বেও আগ্নেয়াস্ত্র এত সহজলভ্য কেন? ভারতে কিন্তু লাইসেন্স ব্যতিরেকে বন্দুক কেনা বা সঙ্গে রাখা যায় না। অবশ্য তা বলে বেআইনি অস্ত্রের কমতি নেই এ দেশে। কিন্তু অবাধ লাইসেন্স দেওয়া হয় না বলেই হয়তো অরল্যান্ডোর মত ঘটনা ভারতে বিরল। এমনকি, কোনও প্রাক্তন সেনা অফিসারও সহজে লাইসেন্স পান না। যে কেউ একবার লাইসেন্স পেলেও প্রতি বছরে পুলিশের দপ্তরে নিয়ে গিয়ে তার নবীকরণ করাতে হয়। মনস্তত্ববিদেরা অবশ্য বলছেন, হাতে অস্ত্র আসবার আগেই সম্ভাব্য আততায়ীর মন থেকে প্রতিশোধ আর ঘৃণার বিষ সরিয়ে ফেলাটা আরও দরকারী। তাঁদের মতে, মনে হিংসা থাকলে এমন ঘটনা ঘটানোর জন্য কেবল লাইসেন্স-ওয়ালা বন্দুকের দরকার হয় না।
যুক্তরাজ্য:
স্তম্ভিত বৃটেন। সর্বত্র ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। অরল্যান্ডো হামলায় বিপুল প্রাণহানির ঘটনায় ঝড় উঠেছে নিন্দা, ক্ষোভ আর ধিক্কারের। সমবেদনা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
এ সপ্তাহান্তে নিজের ৯০তম জন্মদিন উদযাপন করা রানী এলিজাবেথ সংহতি জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে প্রচারিত এক বার্তায় বলা হয়, তিনি ও তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপ এ ঘটনায় স্তম্ভিত।
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, এ হামলায় তিনি শঙ্কিত।
বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলো স্টার্জন উদ্বেগ জানিয়ে লিখেছেন, আতঙ্ক ও দুঃখকে প্রকাশ করার জন্য তার কোন শব্দ নেই। লেবার পার্টির ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি বেন বলেছেন, অরল্যান্ডোতে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা ভয়াবহ ও সাংঘাতিক। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অরল্যান্ডোবাসীর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। ওয়েলসের বাসিন্দা টনি এডওয়ার্ডস লিখেছেন, এ দুনিয়াটা এখন আসলেই উন্মাদ ও অনিরাপদ। লন্ডন এলজিবিটি ক্লাবের পক্ষ থেকে এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, এই মর্মান্তিক ঘৃণ্য ঘটনায় হতাহতদের তারা মনে রাখবে।