অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অনথিভুক্ত রোযা গুইতেরেয লোপেযের আশ্রয় মিলেছে গির্জায়


Rossa Guiterez
Rossa Guiterez

অনথিভুক্ত রোযা গুইতেরেয লোপেযকে ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া তিন সন্তানকে রেখে এল সাল্ভাডরে তাঁকে ফেরত যেতে বলা হয়েছে। বিতাড়িত থেকে বাঁচার জন্য রোযা আশ্রয় নিয়েছেন মেরিল্যান্ডের বেথেসডার একটি গির্জায়।

প্রতি রবিবারের মতো আজকেও গির্জার সব সদস্যরা আসছেন বার্তা শোনার জন্য।জানতে আসছেন কাদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে শুনতে আসছেন রোযার কথা। এই গির্জা হচ্ছে রোযার জন্য শেষ আশা।রোযা বলছিলেন, 'আমার বিশ্বাস আমি এই গির্জায় থেকেই আমার সন্তানদের জন্য লড়াই করে যেতে পারবো। কাঁদতে কাঁদতে রোযা বললেন আমার প্রতিবঅন্ধি ছেলে রয়েছে যার বিশেষ সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছেন'।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যখন কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ রোযাকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে আদেশ দেন তখন তিনি আশ্রয় নেন এই সেডার লেইন ইউনিটারিয়ান ইউনিভারসালিস্ট গির্জায়। এল সাল্ভাডরে দলবদ্ধ সহিংসতা থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চান তিনি। সরকার পর্যবেক্ষিত একটি যন্ত্র শরীরে পরা রোযা বললেন শুধুমাত্র তাঁর মেয়ে জানেন কেন তিনি এই গির্জা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না।

রোযা বললেন,'আমার প্রতিবন্ধী ছেলে বোঝেনা আমি কেন এই পরিস্থিতিতে আছি। আমার ৯ বছরের ছেলেও বুঝে উঠতে পারছেনা আমি কেন এই গির্জায় আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু আমার ১১ বছর বয়সী মেয়ে বোঝে আমার পরিস্থিতি। ও চায় আমি বাড়ী থাকি ওর সাথে, কিন্তু আমি ওকে তখন ওকে বঝানর চেষ্টা করি, ওকে বলি আমি যদি এই গির্জা ছেড়ে অন্য কোথাও যাই তাহলে অভিবাসন আমাকে ধরে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবে'।

রোযার আইনজীবী হেক্টর পেরেয কাসিলাস মনে করেন রোযা ফেরত গেলে তিনি এবং তাঁর সন্তানেরা বিপদের মুখে পড়বেন।

হেক্টর বলেন,'ফেরত যাবার সঙ্গে সঙ্গেই সহিংসতার মুখোমুখি হতে হবে রোযাকে। কেননা তিনি বহুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেয়া তিনটি সন্তান রয়েছে এবং তাদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী। খুব সহজেই তিনি ঐ সহিংস গোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে যাবেন'।

পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিভিন্ন আশ্রয়স্থল গির্জাগুলোতে ৫০ জনের মতো মানুষ রয়েছে যার মধ্যে রোযা একজন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বেড়ে চলেছে এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দেবার সংগঠনগুলো। বিশ্ব গির্জা সেবা সংস্থা অনুযায়ী ২০১৭ সালে এর সংখ্যা ছিল ৪০০ যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১১০০তে। বিশ্ব গির্জা সেবা সংস্থার কোওরডিনেটর নোয়েল এন্দারসান বলেন প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে এই সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

নোয়েল বলেন,'দেখা যাচ্ছে এই মানুষগুলোকে মর্যাদা দেয়া হচ্ছেনা, তাই তারা তাদের নিজদের ধর্মের ডাকের সাড়া দিয়ে জানাচ্ছেন সব মানুষকেই সৃষ্টিকর্তার সন্তান হিসেবে আচরণ করা উচিৎ'।

সরকার যেকোনো সময় অভিযান চালাতে পারে এই শঙ্কাতে রয়েছে আশ্রয়স্থলগুলো। তবে আপাতত অভিবাসন কর্তৃপক্ষ পূর্বের নির্দেশ অনুযায়ী চলার কারণে গির্জা,স্কুল এবং হাসপাতালে অভিযান চালাতে পারছেন না।

অভিবাসন আইনজীবী স্টিভেন ক্যামারোটা এই নির্দেশাবলীর সঙ্গে একমত হলেও আশ্রয়স্থলগুলোর এই পদক্ষেপ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে তাঁর।

স্টিভেন বলেন,'কোনও বিশেষ ক্ষেত্রে এই ধরনের পদক্ষেপ জুক্তিজুক্ত। সবাই কম বেশী দুঃখ প্রকাশ করে থাকেন রোযার মতো সমস্যার সম্মুখীন যারা হন তাদের প্রতি। কিন্তু এইরকম দুঃখ প্রকাশের ফলে আমাদের অবৈধ অভিবাসির সংখ্যা বেড়ে এখনকার বড় অঙ্কে দাঁড়িয়েছে'।

কিন্তু এই সিদার লেইনের গির্জায় যেই পদক্ষেপের ডাক দেয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত পরিস্কার।

সেডার লেইন ইউনিটারিয়ান ইউনিভারসালিস্ট গির্জার সিনিয়র মিনিস্টার রেভারেন্ড আভি জানামাঞ্চি বলেন,'রোযা আমাদের কাছে যখন আসেন আমরা তাঁর কথা শুনি এবং মনে করি তাঁকে আমাদের সাহায্য করা প্রয়োজন। আদালতে তাঁর বিচারকাজ শুরু হওয়া পর্যন্ত আমাদের তাঁকে আশ্রয় দেয়া উচিৎ'।

এই প্রক্রিয়া অনেক সময় সাপেক্ষ। একটি মামলা নিস্পত্তি করতে দুই বছর সময় লেগে যায়।

ভয়েস অফ এমেরিকার বিল রজারসের প্রতিবেদন থেকে শোনাচ্ছেন সানজানা ফিরোজ।

please wait

No media source currently available

0:00 0:04:57 0:00

XS
SM
MD
LG