২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখে বিশ্বব্যাপী এক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সেই প্রতিবাদের কণ্ঠ ছিল নারীদের।সমঅধিকার, নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে খমতায়ন, অভিবাসন সংস্কার, প্রজনন অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা উন্নতি, সমকামীদের অধিকার সহ নানা বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানায় নারীরা। সেই ধারা বজায় রাখতে আজ পালিত হয় ওয়মেন্স মার্চ।
মার্চে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সের,পেশার,জাতির, নারীরা। সবার কণ্ঠে ছিল একই ধ্বনি, প্রতিবাদের ধ্বনি। মার্চে অংশ নিতে আশা স্কুলের টিচার মিশা এলা বারস জানান তিনি একজন ধর্ষিতা, একজন অভিবাসীর কন্যা, এবং মনে করেন সরকার নারীদের অধিকার, নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা নানাবিধ বিষয়ে জথেস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। তিনি এই মার্চে এসেছেন তার মতো আরও যারা আছেন তাদের প্রতিনিধি হয়ে জোর গলায় প্রতিবাদ জানাতে।
তিনি বলছিলেন অভিবাসীরা বেশিরভাগই আসে প্লেনে করে, দেয়াল টোপকে নয়।আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীর চাইতেও আরও গুরুতর সমস্যা রয়েছে। এবং প্রেসিদেনট ট্রাম্পের সেইদিকেই নজর দেয়া প্রয়োজন।তিনি তার বেরথতা লুকানোর জন্য এই বিষয়গুলো নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন বেশী।
তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেই সঙ্গে যুক্ত হয় বৃষ্টি, কোনও কিছুই নারীদের উপস্থিতিকে বাধা দিতে পারেনি। আয়োজকরা ধারণা করেছিলেন ১০,০০০ এর মতো মানুষ অংশ নেবেন। কিন্তু তাদের চমকে দিয়ে উপস্থিত হয় দিগুন মানুষ। বাজনার ছন্দে নাচতে নাচতে মিছিল করে আসতে শুরু করেন সবাই। চারিদিক দেখে কেউ বিশ্বাস করবেনা এটি একটি প্রতিবাদের সমাবেশ।
নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরুষ রাও। তারা মনে করেন নারীদের এই প্রতিবাদ যথাযথ এবং সব ধরনের সহায়তার জন্য তারা নারীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এই সমাবেশে। তাই তো রাস্তার ওপর শীতের টুপি বিক্রি করছিলেন থমাস, স্লোগান দিচ্ছিলেন,‘ওয়মেন বিলংস ইন দা ওয়াইট হাউস।জানতে চাইলাম কেন তিনি এমনটি মনে করেন
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেই জঞ্জাল তৈরি করেছেন ওয়াইট হাউসে একমাত্র নারীরাই পারবেন ঐ জঞ্জাল পরিস্কার করতে। নারীদের সেই ক্ষমতা রয়েছে।যেকোনো বিষয়ে নারীরা সবকিছু বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেয়। কোনও সিদ্ধান্ত তারা হুট করে নেয় না।
তিনি বলছিলেন বিশ্বে নারী নেতৃতে যেই দেশগুলো চলছে, তারা তো পিছিয়ে নেই।যুক্তরাষ্ট্র একটি মুক্ত চিন্তা চেতনার, অগাধ সুযোগের দেশ হিসেবে কেন নারীদের সেই ক্ষমতা দেবেনা।
এই সমাবেশে ক্যানাডা থেকে আসে এনা ভ্রাযেন্স। গতকাল অংশ নিয়েছেন জাতিগত অধিকার আদায়ের প্রতিবাদ সমাবেশে এবং আজ যোগ দেন এই নারীদের সমাবেশে। তিনি বলেন,আমি আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য এই সমাবেশে এসেছি।এখানে সবাই খুব স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নিচ্ছে, দেখ খুব ভালো লাগছে।যদিয়ও আমি ক্যানাডার নাগরিক কিন্তু এই প্রতিবাদ সমাবেশ তো পালিত হচ্ছে বিশ্ব জুড়ে। নারীদের ওপর অন্যায় অবিচার চলছে বিশ্বজুড়ে। তার অবসানের লক্ষে আমার এখানে অংশ নেয়া।
ঐ সমাবেশে নারীরা বলছিলেন গত তিন বছরে নারীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং সফলতা অরজন করেছেন। তারা বলছিলেন নারীদের এখন দুর্বল ভাব্বার অবকাশ নেই কেননা এখন কংগ্রেসেও উল্লেখযোগ্য আসন সংখ্যা এখন নারীদের কাছে রয়েছে।তিন বছর আগে এই নারীদের সমাবেশ শুরু হবার আগে কেউ ভাবেনি নারীদের ক্ষমতা।
সমাবেশে সবাই আশা করেন আগামীতে নারীদের পদচারনা সব ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি থাকবে।এবং উপস্থিত পুরুষরাও এই ক্ষেত্রে যথাসাধ্য সাহায্যের কথা জানান।
সানজানা ফিরোজের প্রতিবেদন।