অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নারী কন্ঠ: যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এবছর নারীর প্রভাব


Trump Womens March

শাগুফতা নাসরিন কুইন

বর্তমানে অমেরিকার রাজনৈতিক জগতে নারীর পদযাত্রা এবং যৌন হয়রানির যারা শিকার হয়েছেন তাদের আন্দোলন কতটা প্রভাব রাখছে-- আজকের নারী কন্ঠে আমরা সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।

please wait
Embed

No media source currently available

0:00 0:08:34 0:00

নারীর পদযাত্রা এবং যৌন হয়রানির যারা শিকার হয়েছেন তাদের মি টু আন্দোলন, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র রাজনৈতিক পটভূমিতে পরিবর্তন এনেছে। রেকর্ড সংখ্যক মহিলা অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে অংশ নিচ্ছেন এবং এবছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদদাতা ক্যাথারিন জিপসান তার এক প্রতিবেদনে নতুন প্রজন্মের মহিলা প্রার্থীদের সম্পর্কে জানান।

গত বছর নারীর পদযাত্রায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন অ্যালিসন গ্যালব্রেথ।

তিনি বলেন, “আমার জীবনের অভিজ্ঞতা আছে। সাধারণ মানুষকে কিনিয়ে কাজ করতে হয় আমি তা বুঝি।”

অ্যালিসন তাঁর রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানকে চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত নেন কয়েক সপ্তাহ পর যখন ওই কংগ্রেসম্যান, স্বাস্থ্যবীমা ভর্তুকি বজায় রাখার তাঁর আবেদন অগ্রাহ্য করেন।

অ্যালিসন গ্যালব্রেথ বলেন, কংগ্রেসম্যান বললেন “আমার মনে হয়না অধিকাংশ মানুষ কিছু মনে করবেন যদি মহিলারা স্বাস্থ্যবীমার জন্য বেশী ব্যয় করেন।” আমি মনে মনে ভাবলাম মহিলারা অবশ্যই মনে করবেন।

অ্যালিসন গ্যালব্রেথ একজন মা, একাই সংসার চালান। সামাজিক মাধ্যমে কাজ করতে তিনি অভ্যস্ত। ১০ বছর সরকারি চাকরিতে কাজ করেছেন। তিনি বললেন

একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি সংকোচ বোধ করেননি।

অ্যালিসন গ্যালব্রেথ বললেন “ আমি ভাবলাম এরা জনগনকে কি দিতে পারবেন? তারা এতদিন কি করেছেন? তাদের যোগ্যতাই বা কি?

কিন্তু গবেষকরা বলেন মহিলা রাজনীতিকদের জন্য এই মনোভাবটা একটু ভিন্ন।

আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জেনিফার ললেস বলেন, “মহিলা ও পুরুষদের যখন ঠিক একই রকম সংক্ষিপ্ত পরিচয়পত্র থাকে এবং অধিকাংশ প্রার্থীদের একই যোগ্যতা থাকে, পুরুষরা আয়নায় তাকিয়ে বলবেন “নির্বচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার যোগ্যতা আমার আছে।” কিন্তু প্রায় ২০ শতাংশ মহিলা নিজের সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করবেন।”

মহিলা প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য বহু দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র অনেক পিছিয়ে আছে। ওই তালিকায় আমেরিকার আগে ১০৩টি দেশ স্থান পেয়েছে। এর কারণ? দেখা গেছে যে সব দেশে মহিলা প্রতিনিধিদের সংখ্যা বেশী যেমন কিউবা, মেক্সিকো বা দক্ষিণ আফ্রিকা, সে সব দেশে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন আছে। ওই সব দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সুসংবদ্ধ জোড়ালো ব্যবস্থা আছে এবং তারা মহিলা প্রার্থী বেছে নেয়।

প্রফেসার ললেস বলেন, “আমাদের এখানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রার্থী হওয়ার যে ব্যবস্থা আছে তাতে আপনাকে উদ্দোগী হতে হবে। মহিলারা যখন দেখেন যে রাজনীতিতে অন্যান্য নারীদের সংখ্যা কম, মহিলারা এখনও পুরুষদের চাইতে কম আয় করেন, রাজনীতিতে মহিলাদের সংযোগ কম তখন তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ভয় পান।”

সম্প্রতি কংগ্রেসে অনেকে পদত্যাগ করেছেন এবং তাতে যা প্রকাশ পেয়েছে তা হচ্ছে যে মহিলারা অনেক বাধা পেরিয়ে নির্বাচনে জয়ী হন, তারা ক্যাপিটল হিলে কঠিন পরিবেশে গিয়ে পরেন।

কংগ্রেস উম্যান টুলসি গ্যাবার্ড একজন ডেমোক্রাট। তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে কংগ্রেসে অবাধে চলা ফেরা করেছেন যৌন অসদাচরণকারিরা। ওদিকে যারা যৌন অসদাচরণ বা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, তারা বিচ্ছিন্ন থেকেছেন, তারা নিপীড়িত হন। তারা লজ্জায় নিশ্চুপ হন। যথেষ্ট হয়েছে।”

#MeToo আন্দোলনের ফলে যে সংলাপ শুরু হযেছে তা কিন্তু শুধু এক পক্ষের নয়।

অর্থ সংগ্রহের এবং মহিলাদের রাজনীতিতে উৎসাহিত করার একটি সংগঠন RightNOW এর জেনিফার হিগিন্স বলেন, “আমি কখনও মনে করিনি যে MeToo আন্দোলন কোন রাজনৈতিক দলের। আমি মনে করি এটি gender বা লিংগ প্রধান।”

জেনিফার হিগিন্স স্বীকার করেন যে Democratic পন্থী বহু মহিলা President Trump এর বিরোধীতা করতে গিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

কিন্তু তিনি বলেন সেই সকল মহিলা যারা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারেন এবং ওয়াশিংটনের পরিস্থিতি সংশোধন করার সুযোগ চান তাদের রিপাবলিকান দল স্বাগত জানায়।

RightNOW এর জেনিফার হিগিন্স বলেন, “এই কংগ্রেস যে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেবে তা হচ্ছে দলের সদস্যদের মধ্যে ভিন্নতা বা বৈচিত্র আনা। এবং আলোচনার টেবিলে আরও মহিলাদের নিয়ে আসা যাতে মহিলারা জটিল সব বিষয় যেমন অভিবাসন, বা মি টু আন্দোলন অথবা ওয়াশিংটন ডিসিতে যে ব্যাপক ভাবে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

কংগ্রেসের উভয় দলেই একই মনোভাব বিরাজ করে।

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের প্রার্থী অ্যালিসন গ্যালব্রেথ বলেন, “প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যদি কোন মোক্ষম সময় থাকে—তা হচ্ছে এখন—এই মুহুর্তে।”

নতুন এই সব দৃষ্টিভঙ্গী, কংগ্রেসের আদল, সংস্কৃতি সবই পাল্টে দিতে পারে।

XS
SM
MD
LG