অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সিরিয়ার একটি গ্রামে কেবল নারী-শিশুরাই থাকেন


সিরিয়ার একটি গ্রামে কেবল নারী-শিশুরাই থাকেন
please wait

No media source currently available

0:00 0:02:18 0:00

সিরিয়ার একটি গ্রামে কেবল নারী-শিশুরাই থাকেন

চারিদিকে নারী অধিকার, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে মহিলা বিধায়কদের অগ্রগতি, বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই যুবসমাজে নানা ক্ষেত্রে বিশেষ করে আবার সেই রাজনীতির কথাই বলবো– ভোটারদের মধ্যে মহিলা সংখ্যা বেড়েছে। এইসব নারীর ক্ষমতায়নের খবরের জোয়ারে সুদূর সিরিয়া থেকে পাওয়া গেল এক অভিনব সংবাদ।

আমাদের ভয়েস অফ আমেরিকার এক সাংবাদিক জানা ওমার সিরিয়ার এক নতুন গ্রামের কথা জানিয়েছেন গ্রামটির নাম ঝিনওয়ার, কুর্দী ভাষায় যার মানে হচ্ছে – শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য একটি জায়গা। বিস্তারিত জানাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার।

please wait

No media source currently available

0:00 0:09:14 0:00

এই ঝিনওয়ার গ্রামে ৩০টি বাড়ী একই ধরণের বাড়ী। লাল মাটি দিয়ে তৈরী। বর্তমানে ঐ গ্রামে পাঁচটি পরিবার বাস করেন। ভবিষ্যতে আরো অনেকেই যাবেন। তবে এই গ্রাম এইসব বাড়ীঘরের বিশেষত্ব হলো সেখানে কোন পরুষ নেই। মহিলা ও ছোট ছেলেমেয়েদের দেখা যাবে। নারী ও শিশু তারাই থাকে ঐ গ্রামে।

ঝিনওয়ার গ্রাম ঐ প্রকল্পের একজন নোজিন। তিনি বলেন, "গ্রামটি তৈরী করা হয়েছে যে সেখানে মহিলারা অবাধে থাকতে পারবে। যেমন– সবার মিলিত এক বসত বাড়ী, প্রকৃতির কাছাকাছি। যেখানে মহিলারা নিজেদের অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারবেন, যেখানে মহিলারা মুক্ত-স্বাধীনভাবে তাদের জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। খোলামেলা পরিবেশ।

নোজিন জার্মানী থেকে সেখানে স্বেচ্ছাকর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়েছেন। ঐ গ্রাম প্রকল্পে কাজ করছেন। নোজিন জানান, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেকের স্বামী মারা গেছেন। তবে তার আশা এই বিশেষ প্রকল্প বিধবা মহিলা ও তাদের সন্তানদের নতুন জীবনের সন্ধান দেবে। বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগাবে।

বাদরিয়া দারউইশের সবামী যুদ্ধে প্রান হরান। দারউইশ কিভাবে পরিবার সামলাবেন কোথায় যাবেন, কি করবেন, কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। তখন তিনি ঝিনওয়ারে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। বাদরিয়া দারউইশ আরবী ভাষায় বলেন, ‘আমার ছেলেমেয়েদের ভরনপোষণ করার মত অর্থ সঙ্গতি ছিল না। গোড়াতে এখানে আসার ব্যাপারে ঠিক নিশ্চিত ছিলাম না। কিন্তু আবার বাচ্চাদের কিভাবে দেখাশোনা করবো সেই সাধ্যও নেই। কি করি। জীবনটা বড়ই কঠিন অনেক ভাবনা চিন্তা করে ছেলেমেয়েদের নিয়ে এখানে চলে এসেছি। আমার ১০ সন্তান এবং তাদের খাওয়া পরার ব্যবস্থা করতে পারবো না সেই সাধ্য আমার নেই, এই দুঃখজনক অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আমি এখানে চলে এসেছি।

আমীরার ৫ সন্তান। স্বামী মারা গেছেন। তিনি বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন আমার ৫জন ছেলেমেয়ে। আমাদের নিজস্ব বাড়ী ছিল না। বাচ্চারাও ছোট ছোট। সংসারে এমন কেউ নেই যে কাজকর্ম করে পরিবার চালতে পারবে। তখন এই প্রকল্পের কথা শুনলাম। যারা অভাবী মানুষের বাড়ী ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়। তারপর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেম কথা বললামকরলাম আর এখানে বাড়ীতে চলে এলাম।

তিনটি স্থানী সংগঠন এই প্রকল্পের অর্থ সহায়তা দেয়। এখন তারা স্কুল, চিকিৎসা ক্লিনিক, এমনকি একটি হাসপাতাল তৈরীর পরিকল্পনা করছে। এই কর্মসূচীর লক্ষ্য হলো সেখানে বসবাসকারী মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া।

ঝিনওয়ার গ্রামের মহিলারা মাটি কাটছেন, রান্না করছেন, সংসারের সব কাজ করে বাইরের কাজও করছেন। সংগঠকরা বলেন– কেবল মহিলাদের জন্য একটি গ্রাম তৈরীর কাজ তাদের সফল হয়েছে। পরীক্ষামুলক প্রকল্প ছিল। উত্তর সিরিয়ায় ঝিনওয়ারের মত আরো অবাসিক এলাকা গড়ে উঠবে যেখানে অসহায় বিধবা অথবা পুরুষহীন সংসারের মহিলারা নিশ্চিন্তে তাদের সন্তানদের নিয়ে জীবন কাটাতে পারবেন। ছেলেমেয়েরা বড় হবে লেখা পড়া করবে মায়ের কষ্ট সার্থক হবে, দুঃখের দিনের অবসান হবে।

XS
SM
MD
LG