অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন


বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন
বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন

বাংলাদেশের ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত হয়েছেন ১৩ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। নিহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ (বিএসএমএমসি) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে, ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের তেঁতুলতলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খরব পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করে।

ঢাকা থেকে মাগুরাগামী ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই পিকআপ ভ্যানের চালকসহ ১১ জন নিহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে, সেখানে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়।

ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, “খবর পেয়েই আমরা ছুটে এসেছি। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের জন্য ৫ লাখ এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৩ লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, “সড়কে চলাচলে আরো সচেতন হতে হবে। তা না হলে থামবে না মৃত্যুর মিছিল। শুধু যাত্রীদের নয়, মালিক ও শ্রমিকদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে।”

বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন
বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন

একই পরিবারের নিহত ৫ জন হলেন; ফরিদপুরের বোয়ালমারীর বেজিডাঙ্গা গ্রামের রফিক মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমি বেগম (২৩), ২ ছেলে রুহান মোল্লা (৬) ও হাবিব মোল্লা (৩) এবং রফিকের মা।

রফিক ঢাকায় একটি সরকারি অফিসে লিফটম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষ করে তিনি মা, স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। বাকি নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

নিহতের স্বজনরা জানান, বাসে সিট না পেয়ে পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে সবাই বাড়ি থেকে সকালে বের হয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হন।

প্রত্যক্ষদর্শী কানাইপুরের দিগনগর গ্রামের বাসিন্দা সাহানা বেগম বলেন, ঘটনাস্থলে আসার পর বাসটির একটি চাকা রাস্তার গর্তে পড়ে যায়। গাড়িটি আড়াআড়িভাবে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পিকআপ ভ্যানটি বাসটির মাঝামাঝিতে এসে আঘাত করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান জানান, মরদেহগুলোর সুরতহালের পর পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তদন্ত কমিটি গঠন

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার।

পুলিশ-বিআরটিএ দায় এড়াতে পারে না: জাতীয় কমিটি

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ফরিদপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহতের ঘটনার দায় পুলিশ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন
বাংলাদেশের ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ নিহত ১৩ জন

কর্তৃপক্ষের অবহেলার নিন্দা জানিয়ে জাতীয় কমিটি বলেছে, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ থাকলেও, দুর্ঘটনার শিকার গাড়িটি ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলো।

নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও দুর্ঘটনায় আহতদের উন্নত চিকিৎসা এবং চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় কমিটি।

XS
SM
MD
LG